সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

নোহ এবং জলপ্লাবন কাল্পনিক নয় কিন্তু বাস্তব

নোহ এবং জলপ্লাবন কাল্পনিক নয় কিন্তু বাস্তব

নোহ এবং জলপ্লাবন কাল্পনিক নয় কিন্তু বাস্তব

 আপনি কি এক উত্তম জগতের জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা করেন, যে-জগতে লোকেরা একে অপরের সঙ্গে শান্তিতে বাস করে? যে-জগতে যুদ্ধ, অপরাধ, উৎপীড়ন নেই? যদি করেন, তাহলে আপনি এমন এক ঐতিহাসিক বিবরণ থেকে উৎসাহ খুঁজে পেতে পারেন, যেটা আপনি হয়তো ভালভাবে জানেন। এটা হল নোহের বিবরণ, বাস্তবিকই একজন ভাল মানুষ, যিনি একটা জাহাজ নির্মাণ করেছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী এক জলপ্লাবন থেকে তাকে ও তার পরিবারকে রক্ষা করেছিল আর এই জলপ্লাবনে দুষ্টরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

কিছু গল্পই ব্যাপকভাবে পরিচিত থাকে। নোহের প্রতি কী ঘটেছিল সেই বিবরণ বাইবেলের আদিপুস্তক ৬ থেকে ৯ অধ্যায়ের মধ্যে পাওয়া যায় আর এটা কোরান ও পৃথিবীব্যাপী অগণিত লোকেদের লোককথাগুলোতে পুনরায় বর্ণিত হয়েছে। এই জলপ্লাবন কি সত্যই ঘটেছিল, নাকি লোকেদেরকে যা সঠিক তা করতে উৎসাহিত করার জন্য এটা নিছকই এক রূপক গল্প? ঈশ্বরতত্ত্ববিদ এবং বিজ্ঞানীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই প্রশ্নটা নিয়ে তর্কবিতর্ক করেছে। কিন্তু, ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল বিষয়টাকে একেবারে স্পষ্ট করে—বিবরণটা কাল্পনিক নয় কিন্তু বাস্তব। এই বিষয়টা বিবেচনা করুন:

কখন জলপ্লাবন শুরু হয়েছিল, কখন ও কোথায় জাহাজটা এসে আটকে গিয়েছিল আর কখন ভূমি শুষ্ক হয়েছিল, আদিপুস্তকের বিবরণ তার সঠিক বছর, মাস ও দিন সম্বন্ধে আমাদেরকে বলে। এ ছাড়া, জাহাজ সম্বন্ধীয় পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণও একেবারে স্পষ্ট—কাঠামো, পরিমাপ এবং এটার জন্য ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী। এর বিপরীতে, নীতি গল্পগুলোর বর্ণনা সাধারণত অস্পষ্ট।

বাইবেলের দুটো বংশতালিকার বিবরণ প্রমাণ দেয় যে, নোহ একজন বাস্তব ব্যক্তি ছিলেন। (১ বংশাবলি ১:৪; লূক ৩:৩৬) ইষ্রা ও লূক উভয়েই, যারা এই বংশতালিকাগুলো লিখেছিলেন, তারা সতর্ক গবেষক ছিল। লূক যিশু খ্রিস্টকে নোহের বংশধর হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন।

নোহ বা জলপ্লাবন সম্বন্ধে ভাববাদী যিশাইয় ও যিহিষ্কেল এবং খ্রিস্টান প্রেরিত পৌল ও পিতর বিভিন্ন উক্তি করেছে।—যিশাইয় ৫৪:৯; যিহিষ্কেল ১৪:১৪, ২০; ইব্রীয় ১১:৭; ১ পিতর ৩:১৯, ২০; ২ পিতর ২:৫.

যিশু খ্রিস্ট এই বলে জলপ্লাবনের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন: “নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের সময়েও তদ্রূপ হইবে। লোক ভোজন পান করিত, বিবাহ করিত, বিবাহিত হইত, যে পর্য্যন্ত না নোহ জাহাজে প্রবেশ করিলেন, আর জলপ্লাবন আসিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল।” (লূক ১৭:২৬, ২৭) জলপ্লাবন যদি না-ই ঘটত, তাহলে ‘মনুষ্যপুত্ত্রের সময়’ সম্বন্ধে যিশুর উক্তি অর্থহীন হবে।

প্রেরিত পিতর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, “উপহাসকেরা” উপস্থিত হবে, যারা বাইবেল যা বলে সেটাকে উপহাস করবে। পিতর লিখেছিলেন যে, “সেই লোকেরা ইচ্ছাপূর্ব্বক ইহা ভুলিয়া যায় যে, . . . [নোহের সময়ের] জগৎ জলে আপ্লাবিত হইয়া নষ্ট হইয়াছিল।” আমাদের কি “ইহা” উপেক্ষা করা উচিত? অবশ্যই না! পিতর আরও বলেছিলেন: “এই বর্ত্তমান কালের আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী অগ্নির নিমিত্ত সঞ্চিত রহিয়াছে, ভক্তিহীন মনুষ্যদের বিচার ও বিনাশের দিন পর্য্যন্ত রক্ষিত হইতেছে।”—২ পিতর ৩:৩-৭.

আবারও, ঈশ্বর দুষ্টদের ধ্বংস করবেন এবং আবারও রক্ষাপ্রাপ্তরা থাকবে। নোহের উদাহরণ অনুকরণ করে আমরাও সেই ধার্মিক ব্যক্তিদের মাঝে থাকতে পারব, যারা এক জগতে রক্ষা পাবে। (w০৮ ৬/১)