সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠ ০৬

জীবন—সৃষ্টি করা হয়েছে না কি আপনা-আপনি এসেছে?

জীবন—সৃষ্টি করা হয়েছে না কি আপনা-আপনি এসেছে?

বাইবেল বলে ঈশ্বর মানুষ, গাছপালা ও জীবজন্তুকে ‘জীবন’ দিয়েছেন। (গীতসংহিতা ৩৬:৯) কিন্তু, কেউ কেউ বলে থাকে, এগুলো সৃষ্টি করা হয়নি, এগুলো আপনা-আপনি এসেছে। আপনার কী মনে হয়? সমস্ত কিছু যদি আপনা-আপনি এসে থাকে, তা হলে তো আমাদের জীবনের কোনো উদ্দেশ্য নেই! কিন্তু, যদি যিহোবা ঈশ্বর জীবন সৃষ্টি করে থাকেন, তা হলে নিশ্চয়ই এই সৃষ্টির পিছনে তাঁর কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। a আসুন দেখি, বাইবেল এই বিষয়ে কী বলে আর এটি যা বলে, তা কেন আমরা বিশ্বাস করতে পারি।

১. কীভাবে নিখিলবিশ্বের শুরু হয়েছে?

বাইবেল বলে: “আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন।” (আদিপুস্তক ১:১) বেশিরভাগ বিজ্ঞানী বলে থাকে, নিখিলবিশ্বের একটা শুরু রয়েছে। কীভাবে ঈশ্বর এটা সৃষ্টি করেছেন? ঈশ্বর তাঁর “আত্মা [“সক্রিয় শক্তি,” NW]” অর্থাৎ পবিত্র শক্তি ব্যবহার করে নিখিলবিশ্বের সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন ছায়াপথ, নক্ষত্র ও গ্রহ।—আদিপুস্তক ১:২.

২. কেন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন?

যিহোবা ঈশ্বর এই পৃথিবী “অনর্থক সৃষ্টি না করিয়া বাসস্থানার্থে নির্ম্মাণ করিয়াছেন।” (যিশাইয় ৪৫:১৮) তিনি এই পৃথিবীকে এত অপূর্বভাবে সৃষ্টি করেছেন, যাতে মানুষ এখানে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। (পড়ুন, যিশাইয় ৪০:২৮; ৪২:৫.) বিজ্ঞানীরা বলে থাকে যে, অন্যান্য গ্রহ থেকে পৃথিবী একদম আলাদা এবং পৃথিবীর বাইরে তারা এমন কোনো গ্রহ খুঁজে পায়নি, যেখানে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু রয়েছে।

৩. কেন মানুষ অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা?

যিহোবা ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করার পর, প্রথমে গাছপালা এবং অন্যান্য প্রাণী সৃষ্টি করেছিলেন আর এরপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন। ঈশ্বর মানুষকে অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে একদম আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছিলেন। কীভাবে তিনি তা করেছিলেন? “ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি” করেছিলেন। (পড়ুন, আদিপুস্তক ১:২৭.) তাই, আমাদের মধ্যে সেই গুণগুলো রয়েছে, যেগুলো ঈশ্বরের মধ্যে রয়েছে। সেইজন্য আমরা একে অন্যের প্রতি প্রেম দেখাতে পারি এবং সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারি। তিনি আমাদের এমন ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যাতে আমরা বিভিন্ন ভাষা শিখতে পারি, অপূর্ব বিষয়গুলো দেখে সেগুলোর প্রশংসা করতে পারি এবং সংগীত উপভোগ করতে পারি। আর সেইসঙ্গে, আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করতে পারি, যা অন্য কোনো প্রাণী করতে পারে না।

গভীরভাবে গবেষণা করুন

কেন আমরা বিশ্বাস করতে পারি যে, সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সৃষ্টি সম্বন্ধে বাইবেলে যা বলা হয়েছে, তা সঠিক? আর মানুষের মধ্যে যে-গুণগুলো রয়েছে, সেগুলো ঈশ্বর সম্বন্ধে আমাদের কী শেখায়? আসুন তা লক্ষ করি।

৪. সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে

প্রকৃতির বিভিন্ন নকশা নকল করে মানুষ যখন জিনিস তৈরি করে, তখন এর কৃতিত্ব মানুষকে দেওয়া হয়। তা হলে, প্রকৃতির নকশা তৈরি করার জন্য কাকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।

  • প্রকৃতির কোন কোন নকশা নকল করে মানুষ জিনিস তৈরি করেছে?

প্রতিটা বাড়ি কেউ-না-কেউ তৈরি করেছে, কিন্তু প্রকৃতির মধ্যে যা-কিছু রয়েছে, সেগুলো কে তৈরি করেছেন? ইব্রীয় ৩:৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:

  • প্রকৃতির কোন কোন বিষয় দেখে আপনি আশ্চর্য হয়ে যান? কেন?

  • আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, এই নিখিলবিশ্ব এবং এতে থাকা সমস্ত কিছু কেউ সৃষ্টি করেছেন? কেন?

আপনি কি জানেন?

আপনি jw.org ওয়েবসাইটে গিয়ে “এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?” এবং “জীবনের উৎস সম্বন্ধে দৃষ্টিভঙ্গি” শিরোনামের অংশ থেকে এই বিষয়ের উপর বিভিন্ন ধারাবাহিক প্রবন্ধ পড়তে এবং ভিডিও দেখতে পারেন।

“অবশ্য, প্রতিটা বাড়ি কেউ-না-কেউ নির্মাণ করে, কিন্তু যিনি সমস্ত কিছু নির্মাণ করেছেন, তিনি হলেন ঈশ্বর”

৫. সৃষ্টি সম্বন্ধে বাইবেলে যা বলা হয়েছে, তা সঠিক

আদিপুস্তক ১ অধ্যায়ে বাইবেল আমাদের জানায় যে, পৃথিবী ও জীবন কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। বাইবেল এই বিষয়ে যা বলে, তা কি সত্য, না কি কোনো কাল্পনিক গল্প? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।

  • বাইবেল বলে, যিহোবা পৃথিবী ও জীবন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই দিনগুলো কি ২৪ ঘণ্টার ছিল?

  • সৃষ্টি সম্বন্ধে বাইবেলে যা বলা হয়েছে, তা কি সত্য এবং আমরা কি তা বিশ্বাস করতে পারি? কেন?

আদিপুস্তক ১:১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:

  • বিজ্ঞানীরা বলে যে, নিখিলবিশ্বের একটা শুরু রয়েছে। আর এই বিষয়ে শাস্ত্রপদে কী লেখা রয়েছে?

কেউ কেউ মনে করে, ঈশ্বর বিবর্তনের মাধ্যমে জীবন সৃষ্টি করেছেন। আদিপুস্তক ১:২১, ২৫, ২৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:

  • বাইবেল কি এটা বলে যে, ঈশ্বর প্রথমে একটা ছোটো প্রাণী সৃষ্টি করেছিলেন এবং পরে সেটা বিবর্তিত হয়ে মাছ, পশুপাখি ও মানুষে পরিণত হয়েছিল? না কি ঈশ্বর নিজ নিজ “জাতি” অনুসারে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছিলেন?

৬. ঈশ্বরের এক অদ্বিতীয় সৃষ্টি হল মানুষ

যিহোবা মানুষকে অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছেন। আদিপুস্তক ১:২৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:

  • বাইবেল বলে, ঈশ্বর তাঁর প্রতিমূর্ত্তিতে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাই, আমরা অন্যদের প্রতি প্রেম দেখাতে পারি এবং তাদের কষ্ট বুঝতে পারি। তা হলে আপনার কী মনে হয়, ঈশ্বরের মধ্যেও কোন গুণগুলো রয়েছে?

কেউ কেউ বলে থাকে: “সৃষ্টি সম্বন্ধে বাইবেল যা বলে, তা সত্য হতে পারে না।”

  • আপনার কী মনে হয়? কেন?

সারাংশ

যিহোবা ঈশ্বর এই নিখিলবিশ্ব এবং সমস্ত জীবন সৃষ্টি করেছেন।

পুনরালোচনা

  • নিখিলবিশ্বের শুরু সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?

  • ঈশ্বর কি প্রথমে একটা ছোটো প্রাণী সৃষ্টি করেছিলেন এবং পরে সেটা বিবর্তিত হয়ে মাছ, পশুপাখি ও মানুষে পরিণত হয়েছিল, না কি তিনি সমস্ত কিছু আলাদা আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছিলেন?

  • মানুষ কেন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা?

লক্ষ্য

আরও জানুন

প্রকৃতির মধ্যে থাকা বিভিন্ন নকশা লক্ষ করুন।

“প্রকৃতি কী শিক্ষা দেয়?” (সচেতন থাক! অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০০৬)

একজন বাবা কীভাবে তার সন্তানকে বাইবেলে দেওয়া সৃষ্টির বিবরণ সম্বন্ধে জানাচ্ছেন, তা দেখুন।

“যিহোবা সমস্তকিছু সৃষ্টি করেছেন” (২:৩৭)

অনেক লোক বলে থাকে যে, ঈশ্বর বিবর্তনের মাধ্যমে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। বাইবেল এই বিষয়ে কী বলে, তা জানুন।

“ঈশ্বর কি বিবর্তনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী সৃষ্টি করেছেন?” (অনলাইন প্রবন্ধ)

আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, না কি সমস্ত কিছু আপনা-আপনি এসেছে? জীবাশ্মের নথি অথবা বৈজ্ঞানিক গবেষণা এই বিষয়ে কী প্রমাণ দেয়, তা জানুন।

জীবনের উৎপত্তি—জিজ্ঞেস করা যথার্থ এমন পাঁচটা প্রশ্ন (ব্রোশার)

a পাঠ ২৫-এ আলোচনা করা হবে যে, মানুষের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী।