সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এক বিশাল সমুদ্রে পথ খোঁজা

এক বিশাল সমুদ্রে পথ খোঁজা

এক বিশাল সমুদ্রে পথ খোঁজা

 মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ১,২০০রও বেশি দ্বীপ ও ক্ষুদ্র দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত, যেগুলোর অধিকাংশই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ছয় মিটারের বেশি উঁচু নয়। সমুদ্রের মধ্যেই সামান্য দূরত্বে থাকা সেই দ্বীপগুলোকে দেখা যায় না। তা সত্ত্বেও, প্রাচীন মার্শালীয় সমুদ্রগামী নাবিকরা এক ক্ষুদ্র দ্বীপ থেকে অন্য ক্ষুদ্র দ্বীপে তাদের মাস্তুল সমেত ডিঙি নৌকা দিয়ে যাত্রা করতে পারত, প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় ২০,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে তাদের পথ খুঁজে নিত। কী করে তারা তা করত? তারা অতি সাধারণ অথচ উল্লেখযোগ্যভাবে কার্যকারী “মানচিত্রগুলো,” যেগুলোকে স্টিক চার্ট বলা হয়, সেগুলোর দ্বারা পরিচালিত হতো।

অভিজ্ঞতা থেকে মার্শালীয় নাবিকরা শিখেছিল যে, স্থলভাগের উপস্থিতি নির্দিষ্ট ধরনের ঢেউয়ের সৃষ্টি করে, যেটা ৩০ কিলোমিটার দূরে থাকা দ্বীপের অবস্থানকে নির্দেশ করে। তাই, অনেক ধরনের ঢেউ ছিল, যে-সম্বন্ধে শিখতে হতো আর স্টিক চার্টগুলো তা মনে রাখতে সাহায্য করত। স্টিক চার্টগুলো দেখতে কীরকম ছিল? ছবিতে আপনি যেমন দেখতে পাচ্ছেন যে, প্যানডেনাস গাছের শেকড়ের ছাল অথবা নারিকেল গাছের পাতার কাঠিগুলো দিয়ে তৈরি স্টিকগুলো একসঙ্গে বাঁধা হতো, যাতে জাফরি তৈরি করা যায়, যা ঢেউয়ের ধরনকে প্রতিনিধিত্ব করত। দ্বীপগুলোর আপেক্ষিক অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য ছোট ছোট ঝিনুক লাগিয়ে দেওয়া হতো।

বহু বছর ধরে, স্টিক চার্টের দ্বারা নৌচালন বিদ্যার বিষয়টা গোপন রাখা হয়েছিল, যা শুধুমাত্র বাছাই করা কিছু ব্যক্তি জানত। কীভাবে একজন নতুন নাবিক স্টিক চার্টের ব্যবহার শিখতেন? একমাত্র প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন করার মাধ্যমে। একজন অভিজ্ঞ নাবিক সম্ভবত তাকে কাছাকাছি দ্বীপগুলোতে ভ্রমণে নিয়ে গিয়ে, নির্জনে নতুন নাবিককে শিক্ষা দিতেন। সেই শিক্ষানবিশ ঢেউয়ের ধরনগুলোকে যতই চিনতে শিখে ফেলতেন, ততই তিনি তার স্টিক চার্ট ব্যবহার করার ব্যাপারে আস্থা অর্জন করতেন। অবশেষে, তিনি একাই সমুদ্রযাত্রায় যেতে পারতেন।

একইভাবে, ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল আমাদের জীবনের যাত্রাপথে নির্দেশক হিসেবে কাজ করতে পারে। প্রথমে, কেউ হয়তো আমাদেরকে শাস্ত্র সম্বন্ধে মৌলিক বোধগম্যতা অর্জনে সাহায্য করতে পারে। এরপর, ক্রমাগত ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন ও এর নীতিগুলোকে যতই আমরা কাজে লাগাতে থাকি, ততই আমরা এটি যা বলে, তার ওপর আস্থা অর্জন করি। ইস্রায়েলীয়দের নেতা যিহোশূয়কে ক্রমাগত ঈশ্বরের বাক্য পড়তে বলা হয়েছিল, যাতে তিনি “তন্মধ্যে যাহা যাহা লিখিত আছে, যত্নপূর্ব্বক সেই সকলের অনুযায়ী কর্ম্ম” করতে পারেন। “তাহা করিলে,” ঈশ্বর যিহোশূয়কে বলেছিলেন, “তোমার শুভগতি হইবে ও তুমি বুদ্ধিপূর্ব্বক চলিবে।” (যিহোশূয়ের পুস্তক ১:৮) হ্যাঁ, বাইবেল আমাদের জন্য এক নিশ্চিত এবং শুভগতিসম্পন্ন বা সাফল্যমণ্ডিত জীবনযাত্রার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানাতে পারে।

[৩২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

© Greg Vaughn