সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রত্যেকেই সুস্বাস্থ্য চায়!

প্রত্যেকেই সুস্বাস্থ্য চায়!

প্রত্যেকেই সুস্বাস্থ্য চায়!

প্রায় দুহাজার সাতশো বছর আগে, একজন ভাববাদী ভবিষ্যতের এমন এক সময় সম্বন্ধে বলেছিলেন, যখন অসুস্থতা আর থাকবে না। এই ভবিষ্যদ্বাণী আমাদের দিন পর্যন্ত সংরক্ষিত রয়েছে আর যিশাইয়ের প্রাচীন লেখাগুলোতে তা পাওয়া যায়। তিনি এমন এক সময় সম্বন্ধে লিখেছিলেন, যখন “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত” এবং তিনি আরও বলেছিলেন: “তৎকালে অন্ধদের চক্ষু খোলা যাইবে, আর বধিরদের কর্ণ মুক্ত হইবে। তৎকালে খঞ্জ হরিণের ন্যায় লম্ফ দিবে, ও গোঙ্গাদের জিহ্বা আনন্দগান করিবে।” (যিশাইয় ৩৩:২৪; ৩৫:৫, ৬) বাইবেলের অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণীও এই ধরনের এক ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বলে। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেলের শেষ বই প্রকাশিত বাক্য এমন এক সময় সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যখন ঈশ্বর ব্যথাকে নির্মূল করবেন।—প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.

এই প্রতিজ্ঞাগুলো কি সত্য হবে? এমন সময় কি কখনো আসবে, যখন মানবজাতি সুস্বাস্থ্য উপভোগ করবে এবং অসুস্থতা আর থাকবে না? এটা ঠিক যে, বর্তমানে মানবজাতির এক বৃহৎ অংশ অতীত প্রজন্মের লোকেদের চেয়ে আরও ভাল স্বাস্থ্য উপভোগ করে থাকে। কিন্তু আগের চেয়ে ভাল স্বাস্থ্য থাকার মানে এই নয় যে, তাদের সর্বোত্তম স্বাস্থ্য রয়েছে। অসুস্থতার কারণে এখনও প্রচুর পরিমাণে মাশুল দিতে হচ্ছে। শুধুমাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়ই অনেক দুশ্চিন্তা নিয়ে আসে। আর নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে, এমনকি এই আধুনিক যুগেও কেউই শারীরিক ও মানসিক রোগব্যাধির প্রচণ্ড আক্রমণ থেকে পুরোপুরি রেহাই পেতে পারে না।

আপনাকে যে-মূল্য দিতে হয়

খারাপ স্বাস্থ্যের বোঝা বিভিন্ন রূপ নিয়ে থাকে। বর্তমানে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে, অসুস্থতার খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপে সম্প্রতি এক বছরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ৫০ কোটি কার্যদিবস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য জায়গায়ও একই পরিস্থিতি বিদ্যমান। কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা হ্রাস ও সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার জন্য খরচ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়া এমন এক অর্থনৈতিক বোঝা চাপিয়ে দেয়, যা সকলকে প্রভাবিত করে। এর ফলে, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর এবং সরকারের লোকসান হয়। এই মূল্যকে পুষিয়ে নিতে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় ও সরকার কর বৃদ্ধি করে। আর কারা তা পরিশোধ করে? শেষ পর্যন্ত আপনাকেই তা পরিশোধ করতে হয়!

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, দরিদ্ররা সাধারণত দেখতে পায় যে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা লাভ করা খুবই কঠিন, অবশ্য আদৌ যদি সেই সুযোগ থেকে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে লক্ষ লক্ষ লোকের দুঃখজনক অবস্থা এটাই, যাদের পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা লাভ করার হয়তো সীমিত সুযোগ রয়েছে বা বলতে গেলে কোনো সুযোগই নেই। এমনকি ধনী দেশগুলোতেও প্রাপ্তিসাধ্য উত্তম স্বাস্থ্যসেবা থেকে উপকার লাভ করার জন্য কাউকে কাউকে সংগ্রাম করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪ কোটি ৬০ লক্ষ লোকের বেলায় এমনটা হয়ে থাকে, যাদের কোনো স্বাস্থ্যবিমা নেই।

অসুস্থতার বোঝা শুধুমাত্র অর্থ সংক্রান্ত নয়। আমাদের যে-চূড়ান্ত মূল্য দিতে হয়, তা হচ্ছে এক মারাত্মক অসুখ ভোগ করার তীব্র যন্ত্রণা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সহ্য করার নিদারুণ কষ্ট, গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখার দুঃখ এবং কোনো প্রিয়জনকে মৃত্যুতে হারানোর হতাশা।

কোনো একদিন অসুস্থতাবিহীন এক জগতে বেঁচে থাকার ধারণাটা খুবই আকর্ষণীয়। প্রত্যেকেই সুস্বাস্থ্য চায়! অনেকে মনে করে যে, এই কথা শুনতে যত অবিশ্বাস্যই লাগুক না কেন, এই ধরনের এক আশা বাস্তব। আবার এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা দৃঢ়প্রত্যয়ী যে, মনুষ্যনির্মিত প্রযুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে একসময় প্রায় সমস্ত রোগব্যাধি ও অসুস্থতা নির্মূল হয়ে যাবে। অন্যদিকে, যারা বাইবেলে বিশ্বাস করে, তারা মনে করে যে, ঈশ্বর অসুস্থতাবিহীন এক জগৎ নিয়ে আসার বিষয়ে বাইবেলের প্রাচীন ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পরিপূর্ণ করবেন। মানুষ কি কখনো এমন এক সময় নিয়ে আসবে, যখন অসুস্থতা আর থাকবে না? ঈশ্বর কি নিয়ে আসবেন? ভবিষ্যতে কী ঘটবে? (g ১/০৭)