সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

কামচাটকা রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরমদেশ

কামচাটকা রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরমদেশ

কামচাটকা রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরমদেশ

রাশিয়ার সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

তিনশো বছরেরও বেশি আগে, এশিয়ার মধ্যে দিয়ে পশ্চিম দিকে অগ্রসররত রাশিয়ার আবিষ্কারকরা এক পার্বত্য উপদ্বীপে এসে পৌঁছেছিল, যেটা মূল ভূখণ্ড থেকে প্রসারিত হয়ে দক্ষিণে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছে আর তা ওখটস্ক সাগরকে বেরিং সাগর থেকে পৃথক করেছে। আয়তনে ইতালির চেয়ে সামান্য বড়, রহস্যময় সৌন্দর্যের এই দেশ বাইরের অধিকাংশ লোকের কাছে এখনও অজানা।

ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের মতো প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ায় কামচাটকায় ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিদ্যমান। শীতকালে উপকূলবর্তী এলাকায় কিছুটা কম ঠাণ্ডা থাকে কিন্তু দেশের মধ্যে কিছু জায়গায় ৬ মিটারেরও বেশি গভীর পর্যন্ত আর মাঝে মাঝে এমনকি প্রায় ১২ মিটার পর্যন্ত তুষার পড়ে! গ্রীষ্মকালে, উপদ্বীপটা প্রায়ই সমুদ্রের কুয়াশায় ঢেকে যায় এবং সেখানে প্রবল বায়ু প্রবাহিত হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে কামচাটকার আগ্নেয় মৃত্তিকায় প্রচুর গাছপালা জন্মে, যার মধ্যে রয়েছে অন্তর্ভুক্ত বেরি জাতীয় গুল্ম, মানুষের সমান লম্বা ঘাস এবং চমৎকার বুনো ফুল যেমন, তৃণভূমির রানি বলে পরিচিত গোলাপ জাতীয় ফুল।

এই উপদ্বীপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে রয়েছে স্টোন অথবা আরমেন্স বার্চ গাছ আর প্রবল বাতাস ও ভারী তুষারপাতের ফলে সেগুলোর কাণ্ড এবং ডালপালা নুইয়ে পড়ে ও পেঁচিয়ে যায়। শক্ত ও ধীরগতিতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত এই বার্চ গাছগুলো অস্বাভাবিক দৃঢ় আর এগুলোর শিকড় বেশ শক্ত করে আঁকড়ে রাখতে পারে, যা এই গাছগুলোকে যেকোনো জায়গায় বৃদ্ধি পেতে সমর্থ করে—এমনকি খাড়া পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে লম্বভাবেও! জুন মাসে, যে-সময়ে তখনও পর্যন্ত তুষারপাত হয়, সেই সময়ে এই গাছের পাতা গজাতে শুরু করে আর আগস্ট মাসে সেগুলো হলদে হয়ে যায়, যা আসন্ন শীতের আগমন বার্তা জানায়।

আগ্নেয়গিরি, গাইজার এবং উষ্ণপ্রস্রবণ

অগ্নি বলয়ে—প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী উচ্চ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে—অবস্থিত কামচাটকায় প্রায় ৩০টা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে। “এক নিখুঁত, অত্যন্ত চমৎকার শঙ্কু (আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের মোচাকার অংশ)” রয়েছে বলে বর্ণিত ক্লিউশেফ্‌স্কায়া আগ্নেয়গিরির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৭৫০ মিটার, যা এটাকে ইউরেশিয়ার উচ্চতম জীবন্ত আগ্নেয়গিরিতে পরিণত করেছে। ১৬৯৭ সাল থেকে—যে-বছর রাশিয়ার আবিষ্কারকরা প্রথম কামচাটকায় আসে, সেই বছর থেকে—এই উপদ্বীপে ৬০০রও বেশি অগ্নুৎপাত সংঘটিত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

১৯৭৫/৭৬ সালে টোলবাচিক এলাকায় একটা চিড় বা ফাটলে অগ্নুৎপাতের ফলে ২,৫০০ মিটারের চেয়েও উঁচু জ্বলন্ত “মশাল” সৃষ্টি হয়েছিল! বাতাসে ভাসমান ভস্মে আগুনের শিখা জ্বলে উঠেছিল। প্রায় দেড় বছর ধরে অবিরাম অগ্নুৎপাতের ফলে চারটে নতুন আগ্নেয় শঙ্কু সৃষ্টি হয়েছিল। হ্রদ ও নদনদী অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল আর গরম ভস্ম সমস্ত বনভূমিকে মূল থেকে শুষ্ক করে ফেলেছিল। পল্লিঅঞ্চলের বিশাল অংশ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছিল।

আনন্দের বিষয় যে, অধিকাংশ অগ্নুৎপাত জনবসতি থেকে অনেক দূরে সংঘটিত হয়েছে আর খুব অল্প লোকই মারা গিয়েছে। কিন্তু দর্শনার্থীদের সতর্ক হওয়ার আরও অন্যান্য কারণ রয়েছে, বিশেষ করে যখন তারা মৃত্যু উপত্যকায় (ভ্যালি অভ্‌ ডেথ) যায়, যেটা কিখপিনিচ আগ্নেয়গিরির পাদদেশে অবস্থিত। বাতাস শান্ত থাকলে এবং বিশেষ করে বরফ গলার সময়ে, বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস উপত্যকায় কেন্দ্রীভূত হয়, এটাকে বন্যপ্রাণীদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত করে। একবার সেই উপত্যকা দশটা ভাল্লুক ও অগণিত ছোট ছোট প্রাণীর মৃতদেহে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।

উজন বলে পরিচিত বিশাল জ্বালামুখের ক্যালডেরায় (অগভীর গর্তে) ফুটন্ত কাদামাটি ও হ্রদ রয়েছে, যেগুলো রংবেরঙের শৈবালে পরিপূর্ণ। সেই একই এলাকায় ভ্যালি অভ্‌ গাইজারস্‌ রয়েছে, যা ১৯৪১ সালে আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু গাইজারে প্রতি দুতিন মিনিট পর পর আর অন্যগুলোতে কয়েক দিন পর পর উদ্‌গিরণ হয়। দর্শনার্থীরা হেলিকপ্টারে চড়ে এই বিস্ময়কর জায়গাগুলোতে যেতে পারে, যা পেত্রোপাভালভস্ক-কামচাটস্কি শহরের ১৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। কিন্তু, বাস্তুসংস্থানিক ভারসাম্য যাতে নষ্ট না হয়, সেইজন্য দর্শনার্থীদের সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেই কারণে কামচাটকার ছয়টা এলাকা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট্‌স্‌ হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে।

কামচাটকায় অগণিত উষ্ণপ্রস্রবণ (হট স্প্রিং) রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোর তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দর্শনার্থীদের আনন্দিত করে এবং দীর্ঘ, শীতের মাসগুলোর কিছুটা ক্ষতিপূরণ জোগায়। এ ছাড়া, বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য ভূতাপ ব্যবহৃত হয়েছে। বস্তুতপক্ষে, রাশিয়ার প্রথম ভূতাপীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র এই উপদ্বীপেই নির্মাণ করা হয়েছিল।

ভাল্লুক, স্যামন এবং সামুদ্রিক ঈগল

কামচাটকায় এখনও প্রায় ১০,০০০ বাদামি ভাল্লুক ঘুরে বেড়ায়। এগুলোর গড় ওজন ১৫০ থেকে ২০০ কিলোগ্রাম আর যদি এগুলোকে হত্যা না করে রেখে দেওয়া হয়, তা হলে এগুলোর ওজন প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। স্থানীয় ইটেলমেন লোকেদের লোককথা অনুযায়ী, ভাল্লুকরা তাদের “ভাই” ছিল আর তারা এই পশুগুলোকে সম্মান করত। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র আসার পর তাদের এই ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছিল। এখন পরিবেশ সংরক্ষণকারীরা এই পশুর ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন।

ভাল্লুকরা লাজুক আর এই কারণে কদাচিৎ চোখে পড়ে। কিন্তু, জুন মাসে যখন স্যামন মাছ নদীতে ডিম ছাড়তে শুরু করে, তখন অনেক ভাল্লুক মাছ খেতে আসে আর এক একটা ভাল্লুক একবারে দুই ডজন মাছ খেয়ে ফেলতে পারে। এমন রাক্ষুসে খিদে কেন? কারণ গ্রীষ্মকালেই ভাল্লুককে সেই খাদ্যের ঘাটতিপূর্ণ ঠাণ্ডার মাসগুলোতে টিকে থাকার জন্য শরীরে যথেষ্ট চর্বি সংগ্রহ করতে হয়, যে-সময়টাতে তারা তাদের শক্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য গুহাতেই ঘুমিয়ে কাটায়।

স্যামন মাছের জন্য ক্ষুধার্ত আরেকটা প্রাণী হল স্টেলার্স সামুদ্রিক ঈগল, এক চমৎকার পাখি, ডানা ছড়ালে যেটার দৈর্ঘ্য ২.৫ মিটার পর্যন্ত হয়। পাখিটা মূলত কালো, তবে এর ঘাড়ে একটু সাদা ছোপ আর ত্রিভুজাকার সাদা লেজ রয়েছে। এখন এই পাখির সংখ্যা প্রায় ৫,০০০ আর দিন দিন এই সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই ঈগলগুলো কেবলমাত্র পৃথিবীর এই অঞ্চলেই দেখা যায় আর মাঝে মাঝে আলাস্কার আ্যলুশান ও প্রিবিলফ দ্বীপপুঞ্জে দেখা যায়। এই পাখিগুলো বছরের পর বছর ধরে একই বাসা ব্যবহার করে আর সেগুলোর যত্ন নেয় ও সেগুলোকে বড় করে। একটা বাসার ব্যাস ৩ মিটারে পৌঁছেছিল আর এতটাই ভারী হয়ে গিয়েছিল যে, এটা যে-বার্চ গাছের ওপরে ছিল, সেই গাছে ফাটল ধরিয়েছিল!

কামচাটকার অধিবাসীরা

বর্তমানে কামচাটকার অধিবাসীদের অধিকাংশই রাশিয়ান, তবে কয়েক হাজার স্থানীয় লোক এখনও বিদ্যমান, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হল উত্তরে বসবাসরত কোরইয়াক লোকেরা। অন্যান্য দলের মধ্যে রয়েছে চুকচি ও ইটেলমেন লোকেরা, যাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। কামচাটকার অধিকাংশ অধিবাসী প্রশাসনিক কেন্দ্র পেত্রোপাভালভস্ক-কামচাটস্কিতে বাস করে। এই উপদ্বীপের অন্যান্য এলাকা জনবিরল আর বেশির ভাগ উপকূলীয় ও নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে কেবলমাত্র নৌকা বা বিমানযোগে যাওয়া যায়।

মাছ ও কাঁকড়া ধরাই আয়ের প্রধান উৎস। কামচাটকার বড় লাল কাঁকড়া বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বিক্রি করার জন্য সেগুলোকে যখন টেবিলের ওপর রাখা হয়, তখন এগুলোর প্রায় ১.৭ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা নখরগুলোকে দেখতে বেশ আগ্রহজনক ও চমৎকার লাগে।

১৯৮৯ সাল থেকে যিহোবার সাক্ষিরা এক ভিন্ন ধরনের মাছ ধরার কথা মাথায় রেখে কামচাটকায় পরিদর্শন করেছে। “মনুষ্যধারী” হিসেবে তারা এই কামচাটকার বিচ্ছিন্ন লোকেদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার নিয়ে গিয়েছে। (মথি ৪:১৯; ২৪:১৪) কেউ কেউ সাড়া দিয়েছে আর এখন তারা ঈশ্বরের সৃষ্টি সম্বন্ধে জানানোর চেয়ে বরং সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বরকে জানতে এবং তাঁর উপাসনা করতে অন্যদেরকে সাহায্য করে থাকে। ফলস্বরূপ, অনেক স্থানীয় লোক মন্দ আত্মাদের ভয় থেকে স্বাধীন হয়েছে, যা সেখানে খুবই সাধারণ। (যাকোব ৪:৭) এ ছাড়া, তারা এমন এক ভবিষ্যৎ সম্বন্ধেও শিখছে, যখন সমস্ত মন্দতা ও দুষ্কর্মকারীদের থেকে পরিষ্কৃত পুরো পৃথিবী, “সমুদ্র যেমন জলে আচ্ছন্ন, তেমনি . . . সদাপ্রভু-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হইবে।”—যিশাইয় ১১:৯. (g ৩/০৭)

[১৮ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

এক নজরকাড়া ক্যালডেরা

উজন ক্যালডেরা, একটা প্রাচীন আগ্নেয়গিরির গহ্বর, প্রায় দশ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত। এর খাড়া দেওয়ালগুলো সেই ‘সমস্তকিছুই’ ধরে রেখেছে, ‘যেগুলোর জন্য কামচাটকা বিখ্যাত,’ একটি তথ্যগ্রন্থ বলে। এই গহ্বরে উষ্ণ ও শীতল প্রস্রবণ, ফুটন্ত কাদামাটির কড়াই, কাদামাটির উদ্‌গিরণ, ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ও রাজহাঁসে পূর্ণ আদিম হ্রদ এবং প্রচুর উদ্ভিদ রয়েছে।

মিরাক্যাল্‌স্‌ অভ্‌ কামচাটকা ল্যান্ড বইটি বলে যে, “পৃথিবীতে এমন আর কোনো জায়গা নেই বললেই চলে,” যেখানে শরৎকাল যেমন সুন্দর তেমনই সংক্ষিপ্ত। তুন্দ্রাঞ্চলের লালমাটির বৈসাদৃশ্যে উজ্জ্বল হলুদ ও সোনালি বর্ণের বার্চ গাছ, আবার ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা ফুটন্ত কাদামাটি থেকে নির্গত সাদা ধোঁয়ার স্তম্ভ গাঢ় নীল আকাশে সহজেই চোখে পড়ার মতো। আর ভোরবেলায়, অগণিত লক্ষ লক্ষ বরফ আবৃত পাতা মাটিতে ঝরে পড়ার ঝিরঝির শব্দে অরণ্য “গান গেয়ে ওঠে,” মৃদু শব্দে শীতের আগমন বার্তা ঘোষণা করে।

[১৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

এক মারাত্মক হ্রদ!

১৯৯৬ সালে কারিমস্কি হ্রদের তলদেশে একটা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যার ফলে ১০ মিটার উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছিল, যেগুলো আশেপাশের অরণ্যকে সমভূমিতে পরিণত করেছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হ্রদটা এতটাই আ্যসিডযুক্ত হয়ে গিয়েছিল যে, তা জীবনধারণের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। কিন্তু অগ্নুৎপাত ও ঢেউগুলো তীরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও, হ্রদের কাছাকাছি কোনো মৃত প্রাণী পাওয়া যায়নি, গবেষক আ্যন্ড্রু লোগান ব্যাখ্যা করেন। “অগ্নুৎপাতের আগে,” তিনি বলেন, “কারিমস্কি হ্রদে লক্ষ লক্ষ মাছ (মূলত স্যামন ও ট্রাউট) ছিল বলে জানা যায়। অগ্নুৎপাতের পর সেই হ্রদে কোনো প্রাণীই ছিল না।” কিন্তু, বেশ কিছু সংখ্যক মাছ হয়তো রক্ষা পেয়েছিল। বিজ্ঞানীরা অনুমান করে যে, কোনো ধরনের বিপদসংকেত—সম্ভবত জলের বিক্রিয়ায় কোনো পরিবর্তন—মাছগুলোকে কাছাকাছি কারিমস্কি নদীতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছিল।

[১৬ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

রাশিয়া

কামচাটকা