বৈষম্য—আপনি কি এর দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন?

বৈষম্য—আপনি কি এর দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন?

বৈষম্য হল একটা ভাইরাসের মতো। যারা এর শিকার হয়, এটা তাদের ক্ষতি করে এবং লোকেরা হয়তো বুঝতে পারে না যে, তারা এর দ্বারা সংক্রামিত।

লোকেরা যে শুধুমাত্র অন্যান্য জাতি, বর্ণ, উপজাতিঅথবা ভাষার লোকেদের দ্বারা বৈষম্যের শিকার হয় এমন নয়, এর সাথে সাথে ভিন্ন ধর্ম, লিঙ্গ অথবা সামাজিক শ্রেণির লোকেদের দ্বারাও বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে। কেউ কেউ লোকেদের বয়স, শিক্ষা, শারীরিক অক্ষমতা অথবা বাহ্যিক চেহারার উপর ভিত্তি করে অন্যদের ভুলভাবে বিচার করে থাকে। তবুও তারা মনে করে যে, তারা বৈষম্যের মনোভাব দেখাচ্ছে না।

আপনিও কি বৈষম্যের দ্বারা সংক্রামিত হতে পারেন? আমাদের মধ্যে অনেকেই বুঝতে পারে যে, অন্যেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। কিন্তু, আমরা নিজেরা যখন বৈষম্যের মনোভাব দেখাই, তখন সেটা বোঝা কঠিন হতে পারে। আসলে, সত্য বিষয়টা হল আমরা প্রত্যেকেই কিছুটা হলেও বৈষম্যের মনোভাব দেখিয়ে থাকি। এই বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড উইলিয়ামস্‌ বলেছেন, ‘লোকেদের মনে যদি আগে থেকে কোনো সম্প্রদায় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা থাকে, তা হলে সেই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা হলে লোকেরা তাদের অজান্তে বৈষম্যের মনোভাব দেখাবে।’

উদাহরণ স্বরূপ, বলকান দেশে যেখানে ইয়োভিস্টা বাস করেন, সেখানে একটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ভাবতাম, এই সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তিই ভালো লোক হতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারিনি যে, আমি বৈষম্যের মনোভাব দেখাচ্ছি। কারণ, আমি ভাবতাম, “তাদের বিষয়ে আমি যা বিশ্বাস করি, ‘সেটাইসত্য।’”

অনেক সরকার বর্ণবিদ্বেষ এবং অন্যান্য বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইন পাশ করেছে। তা সত্ত্বেও, বৈষম্যের মনোভাব পুরোপুরিভাবে নির্মূল হয়নি। কেন? কারণ এই আইনগুলো শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে মনকে নয়। এগুলো একজন ব্যক্তির চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর বৈষম্য একজন ব্যক্তির মন ও হৃদয় থেকে আসে। তা হলে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে কি জয়ী হওয়া সম্ভব? এর কি কোনো প্রতিষেধক রয়েছে?

পরবর্তী প্রবন্ধে পাঁচটা নীতি নিয়ে আলোচনা করা হবে, যেগুলো অনেক লোকের মন ও হৃদয় থেকে বৈষম্যের মনোভাব দূর করতে সাহায্য করেছে।