এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?

মৌমাছির অবতরণ কৌশল

মৌমাছির অবতরণ কৌশল

মৌমাছি অনায়াসে প্রায় যেকোনো দিকে অবতরণ করতে পারে। কীভাবে এটা সম্ভব?

বিবেচনা করুন: সুরক্ষিতভাবে অবতরণ করার জন্য মৌমাছি একেবারে শেষ মুহূর্তে নিজের গতিবেগকে প্রায় শূন্যতে নিয়ে আসে। এটা করার একটা উপায় হতে পারে, ওড়ার গতিবেগ এবং লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব পরিমাপ করা আর সেই অনুসারে গতিবেগ হ্রাস করা। কিন্তু, অধিকাংশ পতঙ্গের পক্ষে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা কঠিন কারণ তাদের চোখগুলো একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত এবং সেগুলোর ফোকাস পরিবর্তন হয় না, ফলে চোখের সাহায্যে দূরত্ব পরিমাপ করা সম্ভব নয়।

মৌমাছির দৃষ্টিশক্তি মানুষের চেয়ে ভিন্ন। দুই চোখের মধ্যে দূরত্ব বেশি থাকায় মানুষ কোনো বস্তুর অবস্থানের সঠিক দূরত্ব নির্ণয় করতে পারে। কিন্তু, মৌমাছি সম্ভবত এক সরল সূত্র কাজে লাগায়: যখন মৌমাছিরা কোনো বস্তুর দিকে এগিয়ে যায়, তখন সেটার আকার ধীরে ধীরে বড়ো হচ্ছে বলে মনে হয়। তারা লক্ষ্যবস্তুর যত কাছে যায়, সেটার আকার তত দ্রুত বাড়তে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-এ করা একটা পরীক্ষার ফলাফল থেকে জানা যায়, মৌমাছি এর গতিবেগ কমাতে থাকে, যাতে লক্ষ্যবস্তুর আকারের আপাত বৃদ্ধির হার অপরিবর্তনীয় থাকে। মৌমাছি যখন লক্ষ্যবস্তুতে এসে পৌঁছায়, তখন এটার গতিবেগ থাকে প্রায় শূন্য, ফলে এটা সুরক্ষিতভাবে অবতরণ করতে পারে।

প্রোসিডিং অভ্‌ দ্যা ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অভ্‌ সায়েন্স পত্রিকার একটা রিপোর্ট বলে: “অবতরণের এই কৌশল এতটাই সরল ও সাধারণ যে, . . . ফ্লাইং রোবটের গাইডেন্স সিস্টেমের জন্য এটা একেবারে আদর্শ।”

আপনি কী মনে করেন? মৌমাছির অবতরণের কৌশল কি ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে? না কি এটাকে সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? ◼