সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আমরা ভাববাদীদের কাছ থেকে সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে শিখি

আমরা ভাববাদীদের কাছ থেকে সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে শিখি

সৃষ্টিকর্তা অতীতে তাঁর ভাববাদীদের কাছে মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা জানিয়েছেন। এই বার্তা আমাদের জানাতে পারে, কীভাবে আমরা সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ লাভ করতে পারি। আসুন আমরা দেখি, তিন জন বিশ্বস্ত ভাববাদীর কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি।

অব্রাহাম

সৃষ্টিকর্তা হলেন পক্ষপাতহীন এবং তিনি সমস্ত মানুষকে আশীর্বাদ করতে চান।

সৃষ্টিকর্তা ভাববাদী অব্রাহামের (ইব্রাহিম) কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, “তোমার মধ্য দিয়েই পৃথিবীর প্রত্যেকটি জাতি আশীর্বাদ পাবে।”—আদিপুস্তক ১২:৩, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।

আমরা কী শিখি? সৃষ্টিকর্তা আমাদের গভীরভাবে প্রেম করেন আর যারা তাঁর বাধ্য হয়, তাদের সবাইকে আশীর্বাদ করতে চান, তা তারা পুরুষ, নারী কিংবা শিশু, যে-ই হোক না কেন।

মোশি

সৃষ্টিকর্তা হলেন করুণাময় এবং যারা তাঁকে জানার জন্য প্রচেষ্টা করে, তাদের তিনি আশীর্বাদ করেন।

সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা ভাববাদী মোশিকে (মূসা) বড়ো বড়ো অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন। তবুও মোশি প্রার্থনা করেছিলেন: “আমি যেন তোমাকে জানিয়া তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাই, এই জন্য আমাকে তোমার পথ সকল জ্ঞাত কর।” (যাত্রাপুস্তক ৩৩:১৩) সৃষ্টিকর্তা মোশির অনুরোধে খুশি হয়েছিলেন এবং তাকে আরও জ্ঞান দেওয়ার এবং তাঁর পথ ও গুণাবলি বোঝার ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে আশীর্বাদ করেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, মোশি শিখেছিলেন, সৃষ্টিকর্তা হলেন, “স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর।”—যাত্রাপুস্তক ৩৪:৬, ৭.

আমরা কী শিখি? আমরা যদি সৃষ্টিকর্তাকে আরও ভালোভাবে জানার জন্য প্রচেষ্টা করি, তা হলে তিনি আমাদের সবাইকে আশীর্বাদ করতে ইচ্ছুক, তা আমরা পুরুষ, নারী কিংবা শিশু, যে-ই হই না কেন। তিনি পবিত্র বাক্য-এ আমাদের জানিয়েছেন যে, কীভাবে তাঁর উপাসনা করতে হবে এবং আমাদের তাঁর অনুগ্রহ ও আশীর্বাদ প্রদান করার জন্য তিনি কতটা উৎসুক।

যিশু

যিশু সমবেদনার সঙ্গে সমস্ত ধরনের অসুস্থ লোকেদের সুস্থ করেছিলেন

আমরা যদি যিশু (ইসা) সম্বন্ধে এবং তিনি যা করেছেন ও শিক্ষা দিয়েছেন, সেই সম্বন্ধে শিখি, তা হলে আমরা সৃষ্টিকর্তার চিরস্থায়ী আশীর্বাদ উপভোগ করতে পারব।

যিশুর জীবন এবং শিক্ষা সম্বন্ধে সৃষ্টিকর্তার বাক্যে অনেক বিবরণ রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা যিশুকে অনেক বড়ো বড়ো অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, যেমন অন্ধ, বধির ও খঞ্জদের সুস্থ করার ক্ষমতা। তিনি এমনকী মৃতদের জীবিত করেছিলেন। এভাবে যিশু সেই আশীর্বাদগুলো প্রদর্শন করেছিলেন, যেগুলো সৃষ্টিকর্তা ভবিষ্যতে পুরো মানবজাতিকে প্রদান করবেন। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, কীভাবে আমরা প্রত্যেকে এই আশীর্বাদগুলো উপভোগ করতে পারি: “ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।”—যোহন ১৭:৩.

যিশু ছিলেন সমবেদনাময়, কোমল এবং সদয় ব্যক্তি। পুরুষ ও নারী, যুবক ও বৃদ্ধ, সকলে তাঁর এই উষ্ণ আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দলে দলে তাঁর কাছে আসত: “আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত; তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে।” (মথি ১১:২৯) তাঁর সময়ে অনেকে নারীদের প্রতি খারাপ আচরণ করত, কিন্তু যিশু তাদের মতো ছিলেন না। তিনি নারীদের প্রতি দয়া, মর্যাদা ও সম্মান দেখিয়ে আচরণ করতেন।

আমরা কী শিখি? যিশু লোকেদের প্রতি গভীর প্রেম দেখিয়েছিলেন আর আমাদের একে অন্যের প্রতি কেমন আচরণ করা উচিত, সেই বিষয়ে এক অসাধারণ উদাহরণ স্থাপন করেছেন।

যিশু সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর নন

পবিত্র বাক্য শিক্ষা দেয়, “আমাদের জন্য ঈশ্বর মাত্র একজনই আছেন,” যিনি নিখিল বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আর যিশু খ্রিস্ট হলেন তাঁর অধীনস্থ একজন বার্তাবাহক। (১ করিন্থীয় ৮:৬, জুবিলী বাইবেল) যিশু স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, সৃষ্টিকর্তা তাঁর চেয়ে মহান আর সৃষ্টিকর্তা তাঁকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।—যোহন ১১:৪১, ৪২; ১৪:২৮. *

^ অনু. 17 যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে আরও জানার জন্য প্রকৃত বিশ্বাস—আপনার জন্য এক সুখী জীবনের চাবিকাঠি ব্রোশারের খণ্ড ৮ এবং দেখুন। ব্রোশারটা www.jw.org-এ পাওয়া যাচ্ছে।