সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বাইবেল কি এখনও আপনার জীবনকে পরিবর্তন করছে?

বাইবেল কি এখনও আপনার জীবনকে পরিবর্তন করছে?

“মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও।”—রোমীয় ১২:২.

গান সংখ্যা: ২৯, ৫২

১-৩. (ক) বাপ্তিস্ম নেওয়ার পরও কোন পরিবর্তনগুলো করা আমাদের জন্য কঠিন হতে পারে? (খ) উন্নতি করার বিষয়টাকে আমরা যতটা কঠিন বলে মনে করেছিলাম, সেটা যদি তার চেয়েও বেশি কঠিন হয়, তা হলে আমরা নিজেদেরকে কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

ক্যাভিন অনেক বছর ধরে জুয়াখেলা, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মাদকদ্রব্য গ্রহণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। [১] এরপর তিনি যিহোবা সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলেন এবং তাঁর বন্ধু হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তা করার জন্য তার জীবনে বড়ো বড়ো পরিবর্তন করার প্রয়োজন ছিল। যিহোবার সাহায্যে এবং তাঁর বাক্য বাইবেলের শক্তিতে, তিনি তা করতে পেরেছিলেন।—ইব্রীয় ৪:১২.

বাপ্তিস্ম নেওয়ার পরও, ক্যাভিনকে তার ব্যক্তিত্ব ক্রমাগত পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যেন তিনি আরও উত্তম খ্রিস্টান হয়ে উঠতে পারেন। (ইফি. ৪:৩১, ৩২) উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি খুব দ্রুত রেগে যেতেন। নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা কত কঠিন, তা দেখে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। আসলে, ক্যাভিন নিজে বলেছিলেন, বাপ্তিস্ম নেওয়ার আগে তার যে-বদভ্যাসগুলো ছিল, সেগুলো ত্যাগ করার চেয়ে নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা তার পক্ষে আরও কঠিন ছিল! কিন্তু, তিনি যিহোবার কাছে সাহায্য চেয়ে বিনতি করার মাধ্যমে এবং অধ্যবসায়ের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করার মাধ্যমে সেই পরিবর্তনগুলো করতে পেরেছিলেন।

বাপ্তিস্মের আগে আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিকে জীবনে বড়ো বড়ো পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যেন আমরা বাইবেলের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপন করতে পারি। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা ও যিশুকে অনুকরণ করার জন্য আমাদের এখনও ছোটো ছোটো পরিবর্তন করা প্রয়োজন। (ইফি. ৫:১, ২; ১ পিতর ২:২১) উদাহরণ স্বরূপ, আমরা হয়তো লক্ষ করেছি, আমাদের মধ্যে অভিযোগ করার প্রবণতা রয়েছে অথবা আমরা প্রায়ই সমালোচনা করি এবং অন্যদের বিষয়ে অবিবেচনাপূর্ণ কথা বলে ফেলি। কিংবা আমরা ভুল করে ফেললে অন্যেরা কী চিন্তা করবে অথবা কী বলবে, তা নিয়ে আমরা কখনো কখনো খুব ভয় পেতে পারি। আমরা হয়তো অনেক বছর ধরে নিজেদের পরিবর্তন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বার বার একই ভুল করে ফেলি। তাই, আমরা হয়তো ভাবতে পারি: ‘কেন আমার জন্য এই ছোটো ছোটো পরিবর্তন করা এত কঠিন? আমি যেন ক্রমাগত আমার ব্যক্তিত্ব উন্নত করতে পারি, সেজন্য বাইবেলের নির্দেশনা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে আমাকে কী করতে হবে?’

আপনি যিহোবাকে খুশি করতে পারেন

৪. কেন আমরা সবসময় যিহোবাকে খুশি করতে পারি না?

আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি আর আমাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাঁকে খুশি করতে চাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আমাদের অসিদ্ধতার কারণে আমরা সবসময় তাঁকে খুশি করতে পারি না। আমরা হয়তো প্রায়ই প্রেরিত পৌলের মতো অনুভব করি, যিনি বলেছিলেন: “আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়।”রোমীয় ৭:১৮; যাকোব ৩:২.

৫. বাপ্তিস্মের আগে আমরা কোন পরিবর্তনগুলো করেছি, তবে কোন দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে আমাদের হয়তো এখনও লড়াই করতে হয়?

মণ্ডলীর সদস্য হওয়ার আগে, আমাদের এমন অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হয়েছিল, যা যিহোবা ঘৃণা করেন। (১ করি. ৬:৯, ১০) কিন্তু আমাদের মধ্যে এখনও অসিদ্ধতা রয়েছে। (কল. ৩:৯, ১০) তাই, অনেক বছর ধরে বাপ্তাইজিত হওয়া সত্ত্বেও আমরা এখনও ভুল করি। মাঝে মাঝে, আমাদের মধ্যে ভুল আকাঙ্ক্ষা এবং অনুভূতি আসতে পারে অথবা ব্যক্তিত্বের কোনো দুর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন হতে পারে। সত্যি বলতে কী, একই দুর্বলতার সঙ্গে আমাদের হয়তো অনেক বছর ধরে লড়াই করতে হতে পারে।

৬, ৭. (ক) আমরা অসিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কোন বিষয়টা আমাদেরকে যিহোবার বন্ধু হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে? (খ) কেন আমাদের যিহোবার কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করা থেকে বিরত হওয়া উচিত নয়?

অসিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, আমরা যিহোবার সঙ্গে এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে ও তাঁর সেবা করতে পারি। আপনি কীভাবে যিহোবার বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন, তা সবসময় মনে রাখুন। তিনিই আপনার মধ্যে ভালো বিষয়গুলো লক্ষ করেছিলেন এবং চেয়েছিলেন যেন আপনি তাঁকে জানতে পারেন। (যোহন ৬:৪৪) তিনি এটাও জানতেন, আপনার মধ্যে ভুলত্রুটি ও দুর্বলতা রয়েছে আর আপনি ভবিষ্যতেও ভুল করবেন। তা সত্ত্বেও, যিহোবা চেয়েছিলেন যেন আপনি তাঁর বন্ধু হন।

যিহোবা আমাদের এতটাই ভালোবেসেছিলেন যে, তিনি আমাদের এক মূল্যবান উপহার দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর পুত্র যিশুকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন, যেন যিশু আমাদের পাপের জন্য মুক্তির মূল্য হিসেবে তাঁর জীবন দিতে পারেন। (যোহন ৩:১৬) তাই, আমরা যখন কোনো ভুল করি, তখন আমরা যিহোবার কাছে ক্ষমা চাইতে পারি। এ ছাড়া, মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা এই বিষয়েও নিশ্চিত থাকতে পারি, তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন আর আমরা তাঁর বন্ধু হিসেবেই থাকতে পারব। (রোমীয় ৭:২৪, ২৫; ১ যোহন ২:১, ২) মনে রাখুন, যিশু অনুতপ্ত পাপীদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই, আমাদের যদি মনে হয় আমরা যা করেছি, সেটা খুব খারাপ, তা হলে আমরা যিহোবার কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করা থেকে বিরত হব না। আমরা যদি ক্ষমা চেয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা না করি, তা হলে সেটা এমন হবে, যেন আমরা নোংরা হাত ধুতে অস্বীকার করছি। অসিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও যিহোবা আমাদেরকে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব করার সুযোগ দিয়েছেন বলে আমরা কতই-না কৃতজ্ঞ!—পড়ুন, ১ তীমথিয় ১:১৫.

৮. কেন আমাদের দুর্বলতাগুলো উপেক্ষা করা উচিত নয়?

অবশ্য, আমরা আমাদের দুর্বলতা উপেক্ষা করতে পারি না অথবা এর জন্য সবসময় কোনো অজুহাত দেখাতে পারি না। কোন ধরনের ব্যক্তিরা যিহোবার বন্ধু হতে পারে, তা তিনি আমাদের জানিয়েছেন। (গীত. ১৫:১-৫) তাই, আমরা যদি তাঁর নিকটবর্তী হতে চাই, তা হলে তাঁকে ও তাঁর পুত্রকে অনুকরণ করার জন্য আমাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া, আমাদের মন্দ আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে ও সেগুলোর মধ্যে কিছু আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে। আমরা যতদিন ধরেই বাপ্তাইজিত হই না কেন, আমাদের ব্যক্তিত্ব ক্রমাগত উন্নত করতে হবে।—২ করি. ১৩:১১.

৯. কীভাবে আমরা জানি, আমরা ক্রমাগত নতুন ব্যক্তিত্ব পরিধান করতে পারি?

প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের বলেছিলেন: “তোমরা পূর্ব্বকালীন আচরণ সম্বন্ধে সেই পুরাতন মনুষ্যকে ত্যাগ কর, যাহা প্রতারণার বিবিধ অভিলাষ মতে ভ্রষ্ট হইয়া পড়িতেছে; আর আপন আপন মনের ভাবে যেন ক্রমশঃ নবীনীকৃত হও, এবং সেই নূতন মনুষ্যকে পরিধান কর, যাহা সত্যের ধার্ম্মিকতায় ও সাধুতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট হইয়াছে।” (ইফি. ৪:২২-২৪) এর অর্থ হল, নিজেদের পরিবর্তন করার জন্য এবং “নূতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে “পরিধান” করার জন্য আমাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা করতে হবে। তাই, আমরা যত দিন ধরেই যিহোবার সেবা করি না কেন, আমরা সবসময় তাঁর গুণাবলি সম্বন্ধে আরও বেশি শিখতে পারি। আর আমরা যাতে যিহোবাকে আরও বেশি অনুকরণ করতে পারি, সেজন্য বাইবেল আমাদের ব্যক্তিত্বে প্রয়োজনীয় রদবদল করে চলার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

কেন এটা অত্যন্ত কঠিন?

১০. ঈশ্বরের বাক্যের সাহায্যে উন্নতি করে চলার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে কী করতে হবে আর এই ক্ষেত্রে কোন প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হতে পারে?

১০ বাইবেল যা বলে, আমরা সকলে তা অনুসরণ করতে চাই। কিন্তু ক্রমাগত পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কেন আমাদের এই ধরনের প্রচেষ্টা করতে হবে? যিহোবা কি এমন ব্যবস্থা করতে পারতেন না, যেন আমরা যা সঠিক, তা সহজেই করতে পারি?

১১-১৩ কেন যিহোবা চান যেন আমরা নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা করি?

১১ আমরা যখন নিখিলবিশ্ব এবং এর অন্তর্ভুক্ত সমস্ত কিছু নিয়ে চিন্তা করি, তখন এই বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহই থাকে না, যিহোবার যেকোনো কিছু করার শক্তি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি সূর্য সৃষ্টি করেছেন, যেটার প্রচণ্ড শক্তি রয়েছে। প্রতি সেকেন্ডে সূর্য প্রচুর পরিমাণ আলো ও তাপ উৎপন্ন করে, যদিও পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এই শক্তি থেকে কেবল অল্প পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়। (গীত. ৭৪:১৬; যিশা. ৪০:২৬) এ ছাড়া, যিহোবা পৃথিবীতে তাঁর দাসদের প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করেন। (যিশা. ৪০:২৯) স্পষ্টতই, যিহোবা যদি চাইতেন, তা হলে তিনি এমন ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন, যাতে আমরা খুব সহজেই আমাদের দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করতে এবং মন্দ আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে পারি। কেন তিনি তা করেননি?

১২ যিহোবা আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা দিয়েছেন। আমরা তাঁর বাধ্য হব কি না, সেটা তিনি আমাদেরই বাছাই করতে দেন। আমরা যখন তাঁর বাধ্য হওয়া বেছে নিই এবং তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি, তখন আমরা দেখাই, আমরা তাঁকে ভালোবাসি এবং তাঁকে খুশি করতে চাই। শয়তান দাবি করে, যিহোবার শাসন করার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু, আমরা যখন যিহোবার বাধ্য হই, তখন আমরা প্রকাশ করি, আমরা যিহোবাকে আমাদের শাসক হিসেবে চাই। আর আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবার বাধ্য থাকার জন্য আমরা যে-সমস্ত প্রচেষ্টা করি, তা আমাদের প্রেমময় পিতার দৃষ্টিতে অনেক মূল্যবান। (ইয়োব ২:৩-৫; হিতো. ২৭:১১) আমাদের দুর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করা যখন কঠিন বলে মনে হয়, তখনও তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করার মাধ্যমে আমরা যিহোবার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করি এবং এটা দেখাই, আমরা তাঁকে আমাদের শাসক হিসেবে চাই।

১৩ যিহোবা আমাদের বলেন, আমরা যেন তাঁর গুণাবলি অনুকরণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। (কল. ৩:১২; পড়ুন, ২ পিতর ১:৫-৭.) এ ছাড়া, তিনি চান যেন আমরা নিজেদের চিন্তাভাবনা ও অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথাসাধ্য করি। (রোমীয় ৮:৫; ১২:৯) কোনো পরিবর্তন করার জন্য আমরা যখন কঠোর পরিশ্রম করি এবং তাতে সফল হই, তখন আমরা অনেক আনন্দ লাভ করি।

ঈশ্বরের বাক্য যেন আপনার জীবনকে ক্রমাগত পরিবর্তন করে

১৪, ১৫. যিহোবা যে-গুণাবলি পছন্দ করেন, তা গড়ে তোলার জন্য আমরা কী করতে পারি? (“ বাইবেল ও প্রার্থনা তাদের জীবনকে পরিবর্তন করেছে” শিরোনামের বাক্স দেখুন।)

১৪ যিহোবা যে-গুণাবলি পছন্দ করেন, তা গড়ে তোলার জন্য আমাদের কী করতে হবে? আমাদের কোন পরিবর্তন করতে হবে, সেই বিষয়ে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিবর্তে যিহোবাকে নির্দেশনা দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। রোমীয় ১২:২ পদ বলে: “এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।” তাই, যিহোবা কী চান, তা খুঁজে বের করার জন্য তিনি যে-সাহায্য জুগিয়েছেন, সেটার উপর আমাদের নির্ভর করতে হবে। আমাদের প্রতিদিন বাইবেল পড়তে হবে, যা পড়ি, তা নিয়ে ধ্যান করতে হবে এবং যিহোবার পবিত্র আত্মা চেয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে হবে। (লূক ১১:১৩; গালা. ৫:২২, ২৩) এভাবে, যিহোবা আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারেন, কোন বিষয়গুলো তাঁকে খুশি করে আর আমরাও শিখতে পারি, কীভাবে যিহোবার মতো করে চিন্তা করতে হয়। এর ফলে, আমাদের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা ও কাজ যিহোবার কাছে আরও সন্তোষজনক হবে এবং কীভাবে আমাদের দুর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা আমরা শিখতে পারব। কিন্তু তারপরও, আমাদের দুর্বলতার সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই করতে হবে।—হিতো. ৪:২৩.

আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে এমন প্রবন্ধ কিংবা বাইবেল থেকে এমন শাস্ত্রপদ সংগ্রহ করে রাখুন, যেগুলো আপনাকে দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে আর মাঝে মাঝে সেগুলো পড়ুন (১৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৫ প্রতিদিন বাইবেল পাঠ করার পাশাপাশি আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনা, যেমন প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! (বর্তমানে সজাগ হোন!) পত্রিকার সাহায্যে বাইবেল অধ্যয়ন করতে হবে। এই পত্রিকাগুলোর বিভিন্ন প্রবন্ধ থেকে আমরা শিখতে পারি, কীভাবে আমরা যিহোবার গুণাবলি অনুকরণ করতে এবং আমাদের দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করতে পারি। আমরা হয়তো এমন প্রবন্ধ অথবা শাস্ত্রপদ খুঁজে পেতে পারি, যেগুলো বিশেষভাবে আমাদের জন্য উপকারজনক। এইরকম কিছু প্রবন্ধ ও শাস্ত্রপদ আমরা সংগ্রহ করে রাখতে পারি, যাতে মাঝে মাঝে সেগুলো পড়তে পারি।

১৬. আমরা যদি দ্রুত পরিবর্তন করতে না পারি, তা হলে কেন আমাদের নিরুৎসাহিত হয়ে পড়া উচিত নয়?

১৬ যিহোবার গুণাবলি অনুকরণ করতে শেখার জন্য সময় প্রয়োজন। তাই আপনার যদি মনে হয়, আপনি যে-পরিবর্তনগুলো করতে চেয়েছেন, সেগুলোর সবই আপনি করতে পারছেন না, তা হলে ধৈর্য ধরুন। বাইবেল যা বলে, সেই অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রথম প্রথম আপনার নিজেকে শাসন করতে হবে। কিন্তু যিহোবা যেভাবে চান, সেভাবে চিন্তা ও আচরণ করার জন্য আপনি যদি আরও চেষ্টা করেন, তা হলে তাঁর মতো করে চিন্তা করা ও যা সঠিক তা করা আপনার জন্য আরও সহজ হবে।—গীত. ৩৭:৩১; হিতো. ২৩:১২; গালা. ৫:১৬, ১৭.

আমাদের অপূর্ব ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করুন

১৭. আমরা যদি যিহোবার প্রতি অনুগত থাকি, তা হলে কোন চমৎকার ভবিষ্যতের জন্য আমরা অপেক্ষা করতে পারি?

১৭ আমরা সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে আছি, যখন আমরা সিদ্ধতায় পৌঁছাব এবং চিরকাল যিহোবার সেবা করব। সেই সময়ে, আমাদেরকে কোনো দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করতে হবে না এবং যিহোবাকে অনুকরণ করা আমাদের পক্ষে আরও সহজ হয়ে উঠবে। কিন্তু এখনও আমরা যিহোবাকে উপাসনা করতে পারি, কারণ তিনি আমাদের জন্য মুক্তির মূল্য জুগিয়ে দিয়েছেন। আমাদের অসিদ্ধতা সত্ত্বেও, আমরা যদি নিজেদের পরিবর্তন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে চলি এবং বাইবেলের মাধ্যমে তিনি আমাদের যা শিক্ষা দেন, তা অনুসরণ করি, তা হলে আমরা তাঁকে খুশি করতে পারব।

১৮, ১৯. আমাদের জীবন ক্রমাগত পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে বাইবেলের যে শক্তি রয়েছে, সেই বিষয়ে কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি?

১৮ ক্যাভিন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথাসাধ্য করেছিলেন। তিনি বাইবেল থেকে যা পড়েছিলেন, তা নিয়ে ধ্যান করেছিলেন এবং তার জীবনে বিভিন্ন পরিবর্তন করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেছিলেন। এ ছাড়া, সহখ্রিস্টানরা তাকে যে-পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেগুলো তিনি অনুসরণ করেছিলেন। উন্নতি করার জন্য যদিও ক্যাভিনের কয়েক বছর লেগেছিল, কিন্তু একটা সময়ে তিনি পরিচারক দাস হিসেবে সেবা করতে পেরেছিলেন। আর গত ২০ বছর ধরে তিনি একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করছেন। কিন্তু তিনি জানেন, এখনও তাকে নিজের দুর্বলতার সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই করতে হচ্ছে।

১৯ ক্যাভিনের মতো আমরাও নিজেদের ব্যক্তিত্ব ক্রমাগত উন্নত করতে পারি। আমরা যদি তা করি, তা হলে আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে পারব। (যাকোব ৪:৮) আর আমরা যখন যিহোবাকে খুশি করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করব, তখন তিনি আমাদের সফল হতে সাহায্য করবেন। আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, বাইবেলের সাহায্যে আমরা ক্রমাগত আমাদের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারব।—গীত. ৩৪:৮.

^ [১] (১ অনুচ্ছেদ) নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।