সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

একটা মিথ্যে বন্ধু

একটা মিথ্যে বন্ধু

একটা মিথ্যে বন্ধু

আপনি যুবক বয়সে একটা “বন্ধু” করেছিলেন এবং আপনি অনুভব করছেন যে, সে আপনাকে পরিপক্ব করেছে এবং আপনাকে অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে সাহায্য করেছে। আপনি যখন চাপের মধ্যে থাকেন, তখন সে আপনাকে “স্বস্তি” জোগায় আর এমনকি আপনি সবসময় তার ওপর নির্ভর করেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি তার আসল রূপ দেখতে শুরু করেন। আপনি যেখানেই যান সে সবসময় আপনার সঙ্গে থাকতে চায়। এমনকি অনেক জায়গায় সে আপনাকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে। সে যদিও আপনাকে পরিপক্ব করে তুলেছে বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু সে আসলে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। আসল কথা হল, সে আপনার টাকা নষ্ট করছে।

সবে সবে আপনি তার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সে আপনাকে ছাড়তে চাইছে না। আর এভাবেই সে আপনার বস হয়ে উঠেছে। আপনি তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ায় আপশোস করছেন।

যে-ব্যক্তিরা ধূমপান করে, তারা সিগারেট সম্বন্ধে এইরকমই মনে করে। আর্লিন নামে একজন মহিলা যিনি ৫০ বছর ধরে ধূমপান করেছেন, তিনি বলেন, “আমি মনে করতাম সিগারেট আমাকে যে-কারোর চেয়ে আরও বেশি সাহায্য করতে পারে। এটা আমার সবচেয়ে পুরোনো বন্ধু ছিল আর কখনো কখনো এটা আমার একমাত্র বন্ধু ছিল।“ আর্লিন বুঝতে পেরেছিলেন, সিগারেট মিথ্যে ও মারাত্মক বন্ধু ছিল। শুরুতে বলা কথাগুলো হয়তো তার সম্বন্ধে লেখা, তবে একটা বিষয় আলাদা। তিনি যখন জানতে পেরেছিলেন, ঈশ্বরের চোখে ধূমপান করা খারাপ কারণ এটা ঈশ্বরের দেওয়া দেহকে ক্ষতি করে, তখন তিনি ধূমপান করা ছেড়ে দিয়েছিলেন।—২ করিন্থীয় ৭:১.

ফ্রাঙ্ক নামে একজন ব্যক্তিও ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, সিগারেট ছাড়ার এক-দু দিন পর তিনি মরিয়া হয়ে হামাগুড়ি দিয়ে, সেই সিগারেটের টুকরোগুলো খুঁজছিলেন। ফ্রাঙ্ক বলেন, “এভাবে হামাগুড়ি দিয়ে ময়লার মধ্যে সেই পুরোনো সিগারেটের টুকরোগুলো খুঁজতে দেখে, আমার নিজের প্রতিই খুব ঘৃণা হয়। আর আমি স্থির করি, ‘এটাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, আমি আর কখনো ধূমপান করব না।’”

ধূমপান বন্ধ করা কেন এত কঠিন হয়? গবেষকরা এর কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে: (১) তামাকজাত দ্রব্য মাদক দ্রব্যের মতোই আসক্ত করতে পারে। (২) নিকোটিনের শ্বাস নেওয়া মাত্রই সাত সেকেন্ডের মধ্যে এটা মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে। (৩) ধূমপান প্রায়ই একজন ব্যক্তির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে কারণ সেটা তার খাওয়া-দাওয়া, কথাবার্তা আর মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে তার সঙ্গী হয়ে ওঠে।

কিন্তু আর্লিন ও ফ্রাঙ্ক যেমন দেখিয়েছেন, এই ক্ষতিকর আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন, কিন্তু এখন বন্ধ করতে চান, তা হলে পরবর্তী প্রবন্ধগুলো আপনাকে তা করতে সাহায্য করবে।