সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এটা কি আসলেই অসততা?

এটা কি আসলেই অসততা?

এটা কি আসলেই অসততা?

“আপনার দুর্ঘটনার রিপোর্টটাতে একটু রদবদল করুন, তাহলে সমস্তকিছুই ঠিক হয়ে যাবে।”

“কর কর্তৃপক্ষদের সমস্তকিছু জানার প্রয়োজন নেই।”

“আসল বিষয়টা হচ্ছে ধরা না পড়া।”

“আপনি যখন বিনামূল্যে এটা পেতে পারেন, তখন দাম দেবেন কেন?”

আপনি যদি আর্থিক বিষয়গুলোর ব্যাপারে পরামর্শ চান, তাহলে আপনি হয়তো এই ধরনের কথাগুলো শুনতে পাবেন। মনে হয় যে, কিছু লোকের কাছে সমস্তকিছুরই চাতুরীপূর্ণ “সমাধান” রয়েছে। প্রশ্ন হল যে, সেই সমাধানগুলো কি আসলেই সৎ?

আজকে অসততা এতটাই ব্যাপক যে, শাস্তি এড়ানোর, টাকা-পয়সা কামানোর অথবা উঁচুতে ওঠার জন্য লোকেরা প্রায়ই মিথ্যা বলা, ঠকানো এবং চুরি করাকে গ্রহণযোগ্য উপায় হিসেবে দেখে থাকে। সমাজের বিশিষ্ট সদস্যরা প্রায়ই সততার ব্যাপারে খারাপ উদাহরণ স্থাপন করে। ইউরোপের একটা দেশে, প্রতারণা এবং আত্মসাৎ করার ঘটনাগুলো ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৮৫ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ তা অসততার অনেক ছোটো ঘটনাকে অন্তর্ভুক্ত করেনি যেগুলোকে কিছু লোক তুচ্ছ দোষ বা “ছোটোখাটো পাপ” বলে থাকে। সম্ভবত, এতে এতটা অবাক হওয়ার কিছু ছিল না যে, সেই দেশের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী এবং রাজনীতিবিদরা এমন এক কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল যেটাতে তারা তাদের কেরিয়ারের উন্নতির জন্য জাল ডিপ্লোমা ব্যবহার করেছিল বলে জানা গিয়েছিল।

কিন্তু, জগতে ব্যাপকভাবে অসততা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও, অনেক লোক যা সঠিক তা-ই করতে চায়। খুব সম্ভবত আপনি তাদের মধ্যে একজন। যেহেতু আপনি হয়তো ঈশ্বরকে ভালোবাসেন, তাই তাঁর চোখে যা সঠিক আপনি তা-ই করতে চান। (১ যোহন ৫:৩) আপনি হয়তো প্রেরিত পৌলের মতোই মনে করতে পারেন যিনি লিখেছিলেন: “আমরা নিশ্চয় জানি, আমাদের সৎসংবেদ আছে, সর্ব্ববিষয়ে সদাচরণ করিতে বাঞ্ছা করিতেছি।” (ইব্রীয় ১৩:১৮) সেই কারণে, আমরা আপনাকে এমন কয়েকটা পরিস্থিতি বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি যেগুলো “সর্ব্ববিষয়ে সদাচরণ” বা সততার সঙ্গে আচরণ করার ব্যাপারে একজন ব্যক্তির আকাঙ্ক্ষাকে পরীক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া, আমরা বাইবেলের সেই নীতিগুলোকেও বিবেচনা করব যেগুলো এই ধরনের পরিস্থিতিগুলোতে সাহায্যকারী হতে পারে।

কোনো দুর্ঘটনার জন্য কার ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত?

একদিন গাড়ি চালানোর সময়, লিসা * নামে একজন অল্পবয়সি মহিলা ভুল করে অন্য গাড়িকে ধাক্কা মারেন। কেউ আহত হয়নি কিন্তু দুটো গাড়ির-ই ক্ষতি হয়েছিল। তার দেশে, অল্পবয়সি চালকদের গাড়ির বিমার জন্য জন্য বড়ো রকমের কিস্তি প্রদান করতে হয় আর প্রত্যেকটা দুর্ঘটনার পর সেই কিস্তির পরিমাণ বাড়তে থাকে। যেহেতু লিসার এক সম্পর্কীয় দাদা গ্রেগর তার সঙ্গে ছিলেন, তাই একজন বন্ধু প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, তারা যেন রিপোর্ট করে যে, গ্রেগর তার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এভাবে, লিসা বড়ো রকমের বিমার খরচ এড়াতে পারেন। সমাধানটা বুদ্ধিমানের বলে মনে হয়েছিল। তার কী করা উচিত?

বিমা কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণের দাবিগুলো প্রদান করার জন্য তাদের বিমাপত্রধারীদের দ্বারা প্রদত্ত কিস্তিগুলোকে ব্যবহার করে থাকে। তাই, তার বন্ধুর পরামর্শকে মেনে নেওয়ার দ্বারা লিসা মূলত অন্যান্য বীমাপত্রধারীর বীমার খরচের হার বাড়ানোর দ্বারা তিনি যে-দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটার জন্য অর্থ প্রদান করতে তাদেরকে বাধ্য করবেন। তিনি শুধুমাত্র জাল রিপোর্টই তৈরি করবেন না সেই সঙ্গে অন্যের কাছ থেকে চুরিও করবেন। দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের জন্য দাবিকৃত বিমার অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য মিথ্যা মন্তব্যগুলো করার ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।

এই ধরনের অসৎ কাজের ক্ষেত্রে আইনগত শাস্তিগুলো এক শক্তিশালী প্রতিরোধক হতে পারে। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্যে অসৎ হওয়া এড়ানোর আরও গুরুত্বপূর্ণ একটা কারণ পাওয়া যায়। “চুরি করিও না,” দশ আজ্ঞার একটি বলে। (যাত্রাপুস্তক ২০:১৫) প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের জন্য সেই আজ্ঞাটি পুনরাবৃত্তি করে বলেছিলেন: “চোর আর চুরি না করুক।” (ইফিষীয় ৪:২৮) বিমা সম্বন্ধীয় এই ধরনের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঈশ্বরের বাক্যের বাধ্য হওয়ার দ্বারা আপনি এমনকিছু করা এড়িয়ে চলেন যেগুলো ঈশ্বর নিন্দা করেন। এ ছাড়া, আপনি ঈশ্বরের ব্যবস্থা এবং আপনার প্রতিবেশীদের জন্য আপনার প্রেম ও সম্মান প্রদর্শনও করেন।—গীতসংহিতা ১১৯:৯৭.

‘কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরের’

পিটার হলেন একজন ব্যাবসায়ী। তার হিসাবরক্ষক পরামর্শ দেন যে, তিনি যেন কম্পিউটারের দামি সরঞ্জাম “কেনাকাটার” ওপর কর ছাড়ের দাবি করেন। পিটারের ব্যাবসার মতো ব্যাবসাতে এই ধরনের জিনিস কেনা সাধারণ বিষয়। যদিও পিটার কখনো এই ধরনের কোনো জিনিস কেনেননি কিন্তু সম্ভবত সরকার এইরকম একটা খরচের বিষয় খোঁজখবর করবে না। সেই কর ছাড় পিটারের কর প্রদানগুলোর ওপর বেশ কিছু অর্থ বাঁচাবে। তার কী করা উচিত? তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে কী তাকে পরিচালনা দিতে পারে?

প্রেরিত পৌল তার দিনের খ্রিস্টানদেরকে বলেছিলেন: “প্রত্যেক প্রাণী প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের বশীভূত হউক; . . . যাহার যাহা প্রাপ্য, তাহাকে তাহা দেও। যাঁহাকে কর দিতে হয়, কর দেও; যাঁহাকে শুল্ক দিতে হয়, শুল্ক দেও।” (রোমীয় ১৩:১, ৭) যারা ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করতে চায়, তারা কর্তৃপক্ষদেরকে সেই সমস্ত কর প্রদান করে থাকে যেগুলো তাদের কাছ থেকে আশা করা হয়। অন্য দিকে, দেশের আইন যদি নির্দিষ্ট ব্যক্তিবিশেষদের অথবা ব্যাবসাগুলোর জন্য করের হার হ্রাস করে, তাহলে এই ধরনের সুযোগসুবিধা দাবি করায় দোষের কিছু নেই যদি আইনগতভাবে তা করা উপযুক্ত হয়।

আরেকটা পরিস্থিতি রয়েছে যেটাতে কর প্রদান করা জড়িত। ডেভিড স্থানীয় একটা কোম্পানিতে ছুতোর মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীরা তাকে তাদের বাড়ির জন্য কিছু ক্যাবিনেট এবং আসবাবপত্র বানাতে বলে আর তিনি তার নিজের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেগুলো বানিয়ে দেন। তিনি তার চাকরিতে যা উপার্জন করেন তারা তাকে তার চেয়ে বেশি অর্থ প্রদান করার প্রস্তাব দেয় কিন্তু তারা আশা করে যে, তিনি যেন বিল ছাড়াই কাজ করেন। ফলে যে-কাজ করা হয়েছে, কেউ-ই সেটার কোনো রেকর্ড রাখবে না এবং কাউকে-ই সেটার জন্য কর প্রদান করতে হবে না। যেহেতু এই ব্যবস্থা থেকে প্রত্যেকেই লাভবান হয়, তাই অনেকেই এটাকে সঠিক বলে মনে করে। যেহেতু ডেভিড ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার ব্যাপারে আগ্রহী, তাই যে-কাজ কোনো রেকর্ড রাখা ছাড়াই করা হয়েছে, সেটাকে তার কীভাবে দেখা উচিত?

যদিও এভাবে কাজ করে একজন ব্যক্তি হয়তো ধরা পড়বেন না কিন্তু তিনি সরকারকে সেই কর প্রদান করছেন না যেটা আদায় করার অধিকার সরকারের রয়েছে। যিশু আদেশ দিয়েছিলেন: “তবে কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরকে দেও, আর ঈশ্বরের যাহা যাহা, ঈশ্বরকে দেও।” (মথি ২২:১৭-২১) কর প্রদান করার বিষয়ে তাঁর শ্রোতাদের চিন্তাধারাকে সংশোধন করার জন্য যিশু একথা বলেছিলেন। সরকারি কর্তৃপক্ষরা, যাদেরকে যিশু কৈসর বলে সম্বোধন করেছিলেন, তারা কর আদায় করাকে তাদের ন্যায্য অধিকার বলে বিবেচনা করে। তাই, খ্রিস্টের অনুসারীরা সব ধরনের কর প্রদান করাকে তাদের শাস্ত্রীয় বাধ্যবাধকতা হিসেবে দেখে থাকে।

পরীক্ষায় নকল করা

মার্তা নামে হাইস্কুলের একজন ছাত্রী তার ফাইনাল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। যেহেতু একটা ভালো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা, পরীক্ষায় তার বেশি নম্বর পাওয়ার ওপর নির্ভর করে, তাই অধ্যয়নের জন্য সে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করেছে। তার কয়েকজন সহপাঠীও প্রস্তুতি নিয়েছে—কিন্তু ভিন্নভাবে। তারা নকল করার জন্য কিছু ইলেকট্রনিক সামগ্রী ব্যবহার করবে যাতে তারা বেশি নম্বর পেতে পারে। মার্তা যাতে ভালো নম্বর পায় তা নিশ্চিত করার জন্য তার কি সেটাই করা উচিত যা “সবাই” করছে?

যেহেতু নকল করা খুবই সাধারণ বিষয়, তাই অনেকে মনে করে যে, এতে দোষের কিছু নেই। “আসল বিষয়টা হচ্ছে ধরা না পড়া,” তারা যুক্তি দেখায়। কিন্তু, সেই যুক্তি সত্য খ্রিস্টানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা, যারা নকল করছে তাদেরকে হয়তো লক্ষ করেন না কিন্তু একজন তা লক্ষ করেন। আমরা যা করি যিহোবা ঈশ্বর তা জানেন এবং আমাদের কাজের জন্য তিনি আমাদের কাছ থেকে নিকাশ নেবেন। পৌল লিখেছিলেন: “তাঁহার সাক্ষাতে কোন সৃষ্ট বস্তু অপ্রকাশিত নয়; কিন্তু তাঁহার চক্ষুর্গোচরে সকলই নগ্ন ও অনাবৃত রহিয়াছে, যাঁহার কাছে আমাদিগকে নিকাশ দিতে হইবে।” (ইব্রীয় ৪:১৩) যা সঠিক আমাদের তা করার ব্যাপারে তিনি আগ্রহী বলে ঈশ্বর আমাদের ওপর লক্ষ রাখেন এটা জানা হল আমরা যখন পরীক্ষা দিই, তখন সৎ হওয়ার জোরালো প্রেরণা, তাই নয় কি?

আপনি কী করবেন?

লিসা, গ্রেগর, পিটার, ডেভিড ও মার্তা যে-পরিস্থিতিগুলোর মুখোমুখি হয়েছিল তারা সেগুলোর গুরুত্ব বুঝেছিল। তারা সততার সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর এভাবে তারা এক শুদ্ধ বিবেক ও তাদের নৈতিক নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছিল। একইরকমের পরিস্থিতিগুলোর মুখোমুখি হওয়ার সময় আপনি কী করবেন?

আপনার সহকর্মী, সহপাঠী এবং প্রতিবেশীরা হয়তো মিথ্যা বলা, ঠকানো অথবা চুরি করাকে গুরুত্ব দেয় না। বস্তুতপক্ষে, তাদের মতো করে কাজ করার জন্য জোর করার চেষ্টায় তারা হয়তো উপহাসকে কাজে লাগাতে পারে। অসৎভাবে কাজ করার চাপ থাকা সত্ত্বেও, কী আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে?

মনে রাখবেন যে, ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করার ফল হল আমাদের এক শুদ্ধ বিবেক থাকা আর সেই সঙ্গে ঈশ্বরের অনুমোদন ও অনুগ্রহ লাভ করা। রাজা দায়ূদ লিখেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তোমার তাম্বুতে কে প্রবাস করিবে? তোমার পবিত্র পর্ব্বতে কে বসতি করিবে? যে ব্যক্তি সিদ্ধ আচরণ ও ধর্ম্মকর্ম্ম করে, এবং হৃদয়ে সত্য কহে। . . . এই সকল কর্ম্ম যে করে, সে কখনও বিচলিত হইবে না।” (গীতসংহিতা ১৫:১-৫) এক শুদ্ধ বিবেক ও স্বর্গের ঈশ্বরের সঙ্গে বন্ধুত্ব হল অসততার মাধ্যমে যেকোনো বস্তুগত সুযোগ লাভের চেয়েও মূল্যবান। (w১০-E ০৬/০১)

[পাদটীকা]

^ কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[১৮ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“চোর আর চুরি না করুক।”

ঈশ্বরের ব্যবস্থার এবং প্রতিবেশীর প্রতি প্রেম আমাদেরকে বিমা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সৎ হতে পরিচালিত করে

[১৮ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“যাহার যাহা প্রাপ্য, তাহাকে তাহা দেও। যাঁহাকে কর দিতে হয়, কর দেও।”

ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করার জন্য আমরা দেশের আইন অনুযায়ী সমস্ত কর প্রদান করি

[১৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“তাঁহার চক্ষুর্গোচরে সকলই . . . অনাবৃত রহিয়াছে, যাঁহার কাছে আমাদিগকে নিকাশ দিতে হইবে।”

যদিও নকল করার সময় শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদেরকে না-ও ধরতে পারে কিন্তু আমরা ঈশ্বরের কাছে সৎ হতে চাই

[২০ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

যে-চুরির বিষয়ে কেউ জানে না

আপনার বন্ধু একটা কম্পিউটার প্রোগ্রামের সবচেয়ে সাম্প্রতিক সংস্করণটি কিনেছেন আর আপনিও সেটি পেতে চান। আপনার জন্য সেই সফ্টওয়্‌যারের একটা কপি তৈরি করার দ্বারা তিনি আপনার অর্থ বাঁচানোর প্রস্তাব দেন। সেটা কি অসৎ?

ব্যবহারকারীরা যখন কম্পিউটারের সফ্টওয়্যা কেনে, তখন তারা সেই প্রোগ্রামের লাইসেন্সের চুক্তিতে লিখিত সীমারেখাগুলোকে মেনে চলার জন্য সম্মত হয়। সেই লাইসেন্স হয়তো ক্রেতাকে শুধুমাত্র একটা কম্পিউটারেই প্রোগ্রামটা ঢোকানো এবং ব্যবহার করাকে অনুমোদন করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে, অন্য কারোর জন্য সফ্টওয়্যাটা কপি করা হল লাইসেন্সের চুক্তিকে লঙ্ঘন করা আর তা বেআইনি। (রোমীয় ১৩:৪) এই ধরনের কপি করাও হল চুরি করা, কারণ তা স্বত্ত্বাধিকারীকে তার আয় থেকে বঞ্চিত করে যেটা পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে।—ইফিষীয় ৪:২৮.

কেউ কেউ হয়তো যুক্তি করতে পারে, ‘কেউ কখনোই তা জানতে পারবে না।’ তা হয়তো সত্য হতে পারে কিন্তু আমাদের যিশুর এই কথাগুলো মনে রাখা উচিত: “অতএব সর্ব্ববিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও।” (মথি ৭:১২) আমরা সকলেই আমাদের কাজের জন্য ন্যায্য বেতন পাওয়াকে উপলব্ধি করি এবং চাই অন্যেরা যেন আমাদের সম্পত্তিকে সম্মানপূর্বক ব্যবহার করে। তাই, আমাদেরও অন্যদের প্রতি একইরকম বিবেচনা দেখানো উচিত। আমরা যে-চুরির বিষয়ে কেউ জানে না এমন চুরি করা এড়িয়ে চলি, যেমন মেধাগত সম্পত্তি * নিয়ে নেওয়া যা আমাদের নয়।—যাত্রাপুস্তক ২২:৭-৯.

[পাদটীকা]

^ মেধাগত সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হল, সংগীত, বই অথবা সফ্টওয়্‌যারের মতো স্বত্ত্বাধিকৃত বিষয়বস্তু তা সে কাগজে ছাপানো থাকুক কিংবা ইলেকট্রনিক উপায়ে মজুত থাকুক। এ ছাড়া, ট্রেডমার্ক, পেটেন্ট, বাণিজ্যিক গোপনীয়তা এবং বিজ্ঞাপনের স্বত্ত্বও এই পর্যায়ে পড়ে।