সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও”

“তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও”

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

“তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও”

ইফিষীয় ৪:৩২–৫:২

 দয়া। সমবেদনা। ক্ষমা। প্রেম। দুঃখের বিষয় যে, আজকে লোকেদেরকে খুব কমই এই গুণগুলো প্রদর্শন করতে দেখা যায়। আপনার সম্বন্ধে কী বলা যায়? আপনার কি কখনো মনে হয়েছে যে, এই মহৎ গুণগুলো গড়ে তোলার জন্য আপনার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে? এক আত্মসমালোচক হৃদয় হয়তো এইরকম মনে করাতে পরিচালিত করতে পারে যে, নির্দিষ্ট কিছু বাধা যেমন, দৃঢ়ভাবে গেঁথে থাকা মন্দ অভ্যাস অথবা অতীতের কিছু বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কারণে আপনার পক্ষে আবেদনময় গুণগুলো গড়ে তোলা অসম্ভব। তবে, বাইবেল এই আশ্বাসজনক সত্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেয়—আমাদের সৃষ্টিকর্তা জানেন যে, ইতিবাচক গুণগুলো গড়ে তোলার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে রয়েছে।

ঈশ্বরের বাক্য সত্য খ্রিস্টানদের পরামর্শ দেয়: “অতএব প্রিয় বৎসদের ন্যায় তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও।” (ইফিষীয় ৫:১) এই কথাগুলো তাঁর উপাসকদের প্রতি ঈশ্বরের আস্থার এক উল্লেখযোগ্য অভিব্যক্তি। কীভাবে? যিহোবা ঈশ্বর মানুষকে তাঁর নিজের প্রতিমূর্তিতে অর্থাৎ তাঁর মতো করেই সৃষ্টি করেছিলেন। (আদিপুস্তক ১:২৬, ২৭) এভাবে ঈশ্বর মানুষকে তাঁর নিজের গুণগুলো দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। * তাই, বাইবেল যখন খ্রিস্টানদেরকে ‘ঈশ্বরের অনুকারী হইবার’ জন্য জোরালো পরামর্শ দেয়, তখন এটা এমন যেন যিহোবা নিজে তাদেরকে বলছেন: ‘আমি তোমাদেরকে বিশ্বাস করি। আমি জানি যে, তোমাদের অসিদ্ধতা সত্ত্বেও, এক নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আমার সদৃশ হওয়ার ক্ষমতা তোমাদের রয়েছে।’

ঈশ্বরের কয়েকটা গুণ কী, যেগুলো আমরা অনুকরণ করতে পারি? আগের ও পরের পদগুলো এর উত্তর দেয়। লক্ষ করুন যে, পৌল ঈশ্বরের অনুকারী হওয়ার পরামর্শটি “অতএব” শব্দটি দ্বারা শুরু করেছিলেন। এই শব্দটি আগের পদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যে-পদে মধুরস্বভাব বা দয়া, করুণচিত্ত বা কোমল সমবেদনা এবং ক্ষমা সম্বন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে। (ইফিষীয় ৪:৩২; ৫:১) এরপর, ঈশ্বরকে অনুকরণ করার পরামর্শ সম্বন্ধে উল্লেখিত পদটির পরের পদে, পৌল খ্রিস্টানদেরকে এমন জীবনধারা অনুধাবন করতে বলেন, যা নিঃস্বার্থ প্রেমের দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। (ইফিষীয় ৫:২) প্রকৃতপক্ষে, দয়া দেখানো, উষ্ণ সমবেদনা প্রকাশ করা, অন্যদেরকে স্বচ্ছন্দে ক্ষমা করা এবং প্রেম প্রদর্শন করার বিষয়ে আমাদের কাছে সর্বকালের সর্বমহান এক উদাহরণ রয়েছে আর তিনি হলেন যিহোবা ঈশ্বর।

কেন আমাদের ঈশ্বরের মতো হতে চাওয়া উচিত? পৌলের কথাগুলোর মধ্যে যে-জোরালো প্রেরণা রয়েছে, তা লক্ষ করুন: “প্রিয় বৎসদের ন্যায় তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও।” এটা কি এক হৃদয়গ্রাহী ধারণা নয়? যিহোবা তাঁর উপাসকদেরকে তাঁর সন্তানের মতোই দেখেন, যাদেরকে তিনি খুবই ভালোবাসেন। একটা ছোট্ট ছেলে যেমন তার বাবার মতো হওয়ার চেষ্টা করে, ঠিক তেমনই সত্য খ্রিস্টানরাও তাদের স্বর্গীয় পিতার মতো হওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে।

যিহোবা তাঁকে অনুকরণ করার জন্য মানুষকে জোর করেন না। এর বিপরীতে, তিনি আমাদেরকে স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে মর্যাদা প্রদান করেছেন। তাই, আপনি ঈশ্বরের অনুকারী হবেন কি না, তা আপনার ওপরই নির্ভর করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১৯, ২০) কিন্তু, কখনো ভুলে যাবেন না যে, আপনার মধ্যে ঈশ্বরতুল্য গুণাবলি প্রদর্শন করার ক্ষমতা রয়েছে। অবশ্য, ঈশ্বরকে অনুকরণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে তাঁর গুণাবলি ও পথ সম্বন্ধে জানতে হবে। বাইবেল আপনাকে সেই ঈশ্বরের গুণাবলি ও পথ সম্বন্ধে সমস্তকিছু জানতে সাহায্য করতে পারে, যাঁর অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব লক্ষ লক্ষ লোককে তাঁর অনুকারী হওয়ার জন্য আকৃষ্ট করেছে। (w০৮ ১০/১)

[পাদটীকা]

^ কলসীয় ৩:৯, ১০ পদ ইঙ্গিত করে যে, ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টা আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যারা ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়, তাদেরকে ‘নূতন মনুষ্য’ বা ব্যক্তিত্ব পরিধান করার জন্য জোরালো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা “সৃষ্টিকর্ত্তার [ঈশ্বরের] প্রতিমূর্ত্তি অনুসারে . . . নূতনীকৃত হইতেছে।”