সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অন্যদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করতে হয় সেই সম্বন্ধে

অন্যদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করতে হয় সেই সম্বন্ধে

যিশুর থেকে আমরা যা শিখি

অন্যদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করতে হয় সেই সম্বন্ধে

 কেন সদয় হবেন?

লোকেরা যখন আপনার প্রতি নির্দয় হয়, এমনকি তখনও কি আপনি সদয় হন? আমরা যদি যিশুকে অনুকরণ করতে চাই, তাহলে যারা আমাদেরকে ঘৃণা করে, এমনকি তাদের প্রতিও আমাদের সদয় হতে হবে। যিশু বলেছিলেন: “যাহারা তোমাদিগকে প্রেম করে, তাহাদিগকেই প্রেম করিলে তোমরা কিরূপ সাধুবাদ পাইতে পার? কেননা পাপীরাও, যাহারা তাহাদিগকে প্রেম করে, তাহাদিগকে প্রেম করে। . . . কিন্তু তোমরা আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও, . . . এবং তোমরা পরাৎপরের সন্তান হইবে, কেননা তিনি অকৃতজ্ঞদের ও দুষ্টদের প্রতিও কৃপাবান্‌” বা সদয়।—লূক ৬:৩২-৩৬; ১০:২৫-৩৭.

কেন ক্ষমাশীল হবেন?

আমরা যখন ভুল করি, তখন আমরা চাই ঈশ্বর যেন আমাদের ক্ষমা করেন। যিশু শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করা আমাদের জন্য উপযুক্ত। (মথি ৬:১২) কিন্তু, যিশু এও বলেছিলেন যে, ঈশ্বর আমাদেরকে কেবলমাত্র তখনই ক্ষমা করবেন, যখন আমরা অন্যদের ক্ষমা করি। তিনি বলেছিলেন: “তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তোমাদিগকেও ক্ষমা করিবেন। কিন্তু তোমরা যদি লোকদিগকে ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও অপরাধ ক্ষমা করিবেন না।”—মথি ৬:১৪, ১৫.

কীভাবে পরিবারগুলো সুখী হতে পারে?

যদিও যিশু কখনো বিয়ে করেননি, তবুও কীভাবে পারিবারিক জীবন সুখী করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে আমরা তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। তাঁর কথা ও কাজের দ্বারা তিনি এক আদর্শ স্থাপন করেছেন, যাতে আমরা তাঁকে অনুকরণ করতে পারি। নীচের তিনটে বিষয় বিবেচনা করুন:

১. স্বামীকে অবশ্যই তার স্ত্রীকে নিজ দেহের মতো ভালবাসতে হবে। যিশু স্বামীদের জন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন। তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “এক নূতন আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা পরস্পর প্রেম কর।” কতখানি প্রেম করবে? “আমি যেমন তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি,” তিনি বলেছিলেন। (যোহন ১৩:৩৪) স্বামীদের প্রতি এই নীতিটিকে প্রয়োগ করে বাইবেল বলে: “স্বামীরা, তোমরা আপন আপন স্ত্রীকে সেইরূপ প্রেম কর, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীকে প্রেম করিলেন, আর তাহার নিমিত্ত আপনাকে প্রদান করিলেন; . . . এইরূপে স্বামীরাও আপন আপন স্ত্রীকে আপন আপন দেহ বলিয়া প্রেম করিতে বাধ্য। আপন স্ত্রীকে যে প্রেম করে, সে আপনাকেই প্রেম করে। কেহ ত কখনও নিজ মাংসের প্রতি দ্বেষ করে নাই, বরং সকলে তাহার ভরণ পোষণ ও লালন পালন করে; যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীর প্রতি করিতেছেন।”—ইফিষীয় ৫:২৫, ২৮, ২৯.

২. বিবাহ সাথিদের অবশ্যই একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হবে। বিবাহের বাইরে যৌন সম্পর্ক করা হল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এক পাপ আর তা পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। যিশু বলেছিলেন: “তোমরা কি পাঠ কর নাই . . . ‘এই কারণ মনুষ্য পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং সে দুই জন একাঙ্গ হইবে’? সুতরাং তাহারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ। অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক। . . . আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।”—মথি ১৯:৪-৯.

৩. সন্তানদেরকে অবশ্যই তাদের বাবামার বশীভূত হতে হবে। যদিও যিশু ছিলেন সিদ্ধ ও তাঁর বাবামা ছিল অসিদ্ধ, তবুও সন্তান হিসেবে তিনি তাদের বাধ্য ছিলেন। যিশুর বয়স যখন ১২ বছর, বাইবেল তাঁর সম্বন্ধে বলে: “তিনি তাঁহাদের [তাঁর বাবামার] সঙ্গে নামিয়া নাসরতে চলিয়া গেলেন, ও তাঁহাদের বশীভূত থাকিলেন।”—লূক ২:৫১; ইফিষীয় ৬:১-৩.

কেন এই নীতিগুলো প্রয়োগ প্রয়োগ করবেন?

যিশু তাঁর শিষ্যদেরকে যে-বিষয়গুলো শিখিয়েছিলেন, সেই সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: “এ সকল যখন তোমরা জান, ধন্য [“সুখী,” NW] তোমরা, যদি এ সকল পালন কর।” (যোহন ১৩:১৭) সত্য খ্রিস্টান হওয়ার জন্য, আমাদেরকে অন্যদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয়, সেই সম্বন্ধে যিশু যে-উপদেশ দিয়েছিলেন, তা অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেছিলেন: “তোমরা যদি আপনাদের মধ্যে পরস্পর প্রেম রাখ, তবে তাহাতেই সকলে জানিবে যে, তোমরা আমার শিষ্য।”—যোহন ১৩:৩৫. (w০৮ ৮/১)

আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১৪ অধ্যায় দেখুন। *

[পাদটীকা]

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

[২৪, ২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

অপব্যয়ী পুত্র সম্বন্ধে যিশুর দৃষ্টান্ত আমাদেরকে সদয় ও ক্ষমাশীল হওয়ার গুরুত্ব সম্বন্ধে শিক্ষা দেয়।—লূক ১৫:১১-৩২

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

বিবাহ সাথিদের একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা উচিত