সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আশাবাদী হওয়া কি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে?

আশাবাদী হওয়া কি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে?

আশাবাদী হওয়া কি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে?

“উৎফুল্ল হৃদয় উত্তম ঔষধ,” এই কথাগুলো এক ইস্রায়েলীয় বিজ্ঞ রাজা প্রায় ৩,০০০ বছর আগে লিখেছিলেন। (হিতোপদেশ [প্রবচনমালা] ১৭:২২, বাংলা জুবিলী বাইবেল) আজকে ডাক্তাররা, এই অনুপ্রাণিত কথাগুলোর মধ্যে যে-প্রজ্ঞা রয়েছে, তা স্বীকার করছে। কিন্তু, আমাদের অনেকেরই হয়তো সহজাতভাবে এক “উৎফুল্ল হৃদয়” থাকে না।

আমাদের মধ্যে খুব কম লোকই আছে, যারা প্রাত্যহিক জীবনের সেই চাপগুলো এড়িয়ে চলতে পারে, যেগুলো হতাশাজনক ও নিরাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দিকে পরিচালিত করে। তবুও, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত করে যে, বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, আশাবাদী হওয়ার মূল্য রয়েছে।

আশাবাদী হওয়াকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, “এক প্রত্যাশাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বা মনোভাব রাখা; এক অনুকূল ফলাফল প্রত্যাশা করার প্রবণতা।” একজন আশাবাদী ব্যক্তি যখন কোনো ব্যাপারে পরাজিত হন, তখন তিনি কেমন বোধ করেন? তিনি সেই পরাজয়কে এক স্থায়ী বিষয় হিসেবে দেখেন না। তবে এর মানে এই নয় যে, তিনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করেন। এর পরিবর্তে, তিনি বাস্তবকে মেনে নেন এবং বিষয়টাকে পরীক্ষা করে দেখেন। তারপর, পরিস্থিতি যখন সুযোগ করে দেয়, তখন তিনি সেই অবস্থাকে পরিবর্তন করতে বা উন্নত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

অন্যদিকে, একজন নিরাশাবাদী ব্যক্তি প্রায়ই দুর্দশার জন্য নিজেকে দোষ দিয়ে থাকেন। তিনি ধরে নেন যে, দুদর্শাজনক পরিস্থিতি হচ্ছে স্থায়ী এবং তা তার নিজের বোকামি, অযোগ্যতা বা খারাপ চেহারার কারণেই ঘটে থাকে। ফলে, তিনি ব্যর্থতার কাছেই হার মানেন।

আশাবাদী হওয়া কি আমাদের স্বাস্থ্য ও মঙ্গলকে প্রভাবিত করে? হ্যাঁ, করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনিসোটার রচেস্টারের মেয়ো ক্লিনিকে ৮০০ জনেরও বেশি রোগীর ওপর ৩০ বছর ধরে চালানো একটা গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছিল যে, আশাবাদী ব্যক্তিদের অপেক্ষাকৃত ভাল স্বাস্থ্য ছিল এবং লক্ষণীয়ভাবে তারা অন্যদের চেয়ে দীর্ঘ দিন বেঁচে ছিল। গবেষকরা এও লক্ষ করেছিল যে, আশাবাদী ব্যক্তিরা চাপগুলোর সঙ্গে আরও ভালভাবে মোকাবিলা করেছিল এবং সম্ভবত তেমন একটা বিষণ্ণ বোধ করেনি।

কিন্তু, এমন এক জগৎ যেখানে সমস্যাগুলো দিন দিন কেবল বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে হয়, সেখানে আশাবাদী ব্যক্তি হওয়া মোটেই সহজ নয়। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, অনেকে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করাকে কঠিন বলে মনে করে। এই সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য কী করা যেতে পারে? এই প্রবন্ধের সঙ্গে দেওয়া বাক্সে আপনি কিছু পরামর্শ খুঁজে পাবেন, যেগুলো আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

যদিও উৎফুল্ল মনোভাব সমস্তকিছুকে ভাল করে ফেলবে না কিন্তু এটা আরও স্বাস্থ্যকর ও আরও বেশি পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। বাইবেল বলে: “দুঃখীর সকল দিনই অশুভ; কিন্তু যাহার হৃষ্ট মন, তাহার সততই ভোজ।”—হিতোপদেশ ১৫:১৫. (g ৯/০৭)

[২২ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

আরও বেশি আশাবাদী হওয়ার জন্য কিছু পরামর্শ *

◼ আপনি যদি মনে করেন যে, কোনো একটা বিষয় আপনি উপভোগ করবেন না বা আপনি কোনো প্রকল্পে সফল হবেন না, তা হলে সেই ধারণা বাতিল করুন। ইতিবাচক বিষয়ের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন।

◼ আপনার কাজ উপভোগ করার চেষ্টা করুন। আপনার কাজ যা-ই হোক না কেন, সেই দিকগুলো খুঁজুন, যেগুলো আপনাকে আনন্দ দেয়।

◼ সেই বন্ধুদের খুঁজুন, যারা জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখে থাকে।

◼ আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এমন পরিস্থিতিগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিন; আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না এমন পরিস্থিতিগুলোকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

◼ প্রতিদিন, আপনার প্রতি ঘটেছে এমন তিনটে ভাল বিষয় লিখে রাখুন।

[পাদটীকা]

^ উপরোক্ত তালিকাটা আংশিকভাবে, মেয়ো ক্লিনিকের প্রস্তুতকৃত একটি প্রকাশনার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।