সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এই জগৎ কোন দিকে এগিয়ে চলেছে?

এই জগৎ কোন দিকে এগিয়ে চলেছে?

এই জগৎ কোন দিকে এগিয়ে চলেছে?

পরবর্তী ১০, ২০ বা ৩০ বছরে পরিস্থিতি কেমন হবে? সন্ত্রাসের এই যুগে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করা আতঙ্কজনক হতে পারে। প্রযুক্তিবিদ্যা দ্রুত উন্নতি ও প্রসার লাভ করছে। বিশ্বায়ন অনেক রাষ্ট্রকে পরস্পর নির্ভরশীল করেছে। জগতের নেতারা কি একজোট হয়ে আরও উজ্জ্বল এক ভবিষ্যৎ নিয়ে আসবে? কিছু লোক এর উত্তরে হ্যাঁ বলে, এই প্রত্যাশা নিয়ে যে ২০১৫ সালের মধ্যে নেতারা দরিদ্রতার প্রসার ও ক্ষুধার কষ্ট দূর করতে, এইডসের বিস্তার রোধ করতে এবং বিশুদ্ধ জল ও পর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পাচ্ছে না এমন লোকেদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।—“আশাবাদ বনাম বাস্তবতা” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

কিন্তু, ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে মানুষের ধারণা প্রায়ই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কয়েক দশক আগে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন যে, ১৯৮৪ সালের মধ্যে কৃষকরা জলের নীচে চালিত ট্র্যাক্টরের সাহায্যে সমুদ্রতলে চাষ করবে; আরেকজন বলেছিলেন যে, ১৯৯৫ সালের মধ্যে কম্পিউটার চালিত যন্ত্রাংশের দ্বারা এমন গাড়ি প্রস্তুত করা হবে, যা সংঘর্ষ প্রতিরোধ করবে; অন্য আরেকজন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ২০০০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০,০০০ লোক মহাশূন্যে বাস করবে ও সেখানেই কাজ করবে। অবশ্য, যারা এই ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল তারা এখন সম্ভবত মনে করে যে, তারা নীরব থাকলেই ভাল হতো। একজন সাংবাদিক লিখেছিলেন: “অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে সময়ের প্রবাহই জগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ বোকা প্রমাণিত করেছে।”

আমাদের নির্দেশনার জন্য এক “মানচিত্র”

লোকেরা ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে ক্রমাগত অনুসন্ধান করে যাচ্ছে কিন্তু মাঝে মাঝে তাদের ধারণা বাস্তববাদী না হয়ে আদর্শবাদী হয়ে থাকে। সামনে কী রয়েছে, সেই সম্বন্ধে এক নির্ভরযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি আমরা কোথায় পেতে পারি?

একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। কল্পনা করুন যে, আপনি বিদেশে একটা বাসে করে ভ্রমণ করছেন। যেহেতু এলাকাটা অচেনা, তাই আপনি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করেছেন। ‘আসলে আমি কোন জায়গায় আছি?’ আপনি ভাবছেন। ‘এই বাস কি সঠিক পথেই এগিয়ে চলেছে? আমি আমার গন্তব্য থেকে কত দূরে আছি?’ একটা সঠিক মানচিত্র পরীক্ষা করে এবং আপনার জানালার বাইরে রাস্তার সংকেতগুলো ভাল করে লক্ষ করার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে পারেন।

যারা ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়, তাদের অনেকের পরিস্থিতিও বর্তমানে একইরকম। ‘আমরা কোন দিকে এগিয়ে চলেছি?’ তারা ভাবে। ‘আমরা কি আসলেই বিশ্বশান্তির পথে এগিয়ে চলেছি? যদি তা-ই হয়, তা হলে কখন আমরা সেই গন্তব্যে পৌঁছাব?’ বাইবেল একটা মানচিত্রের মতো, যেটি আমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে সাহায্য করতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে এটি পড়ার—এবং আমাদের “জানালার” বাইরে জগতে যে-ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো ভাল করে লক্ষ করার—মাধ্যমে আমরা কোথায় আছি ও কোন দিকে চলেছি সেই সম্বন্ধে অনেকটাই জানতে পারি। তবে, প্রথমে আমাদের বিবেচনা করতে হবে যে, কীভাবে আমাদের সমস্যাগুলো শুরু হয়েছিল।

এক দুঃখজনক সূচনা

বাইবেল আমাদের বলে যে, ঈশ্বর যখন প্রথম নারী-পুরুষকে সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তারা সিদ্ধ মানুষ ছিল এবং তিনি তাদের পরমদেশতুল্য পরিবেশে রেখেছিলেন। আদম ও হবাকে কেবলমাত্র ৭০ বা ৮০ বছর নয়—অনন্তকাল বেঁচে থাকার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। ঈশ্বর তাদের বলেছিলেন: “তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও বশীভূত কর।” আদম, হবা ও তাদের বংশধরদের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ছিল যে তারা পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় পরমদেশকে প্রসারিত করবে।—আদিপুস্তক ১:২৮; ২:৮, ১৫, ২২.

কিন্তু, আদম ও হবা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। ফলস্বরূপ, তারা তাদের পরমদেশ গৃহ হারিয়েছিল। অধিকন্তু, ক্রমান্বয়ে অথচ ধীরে ধীরে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। আদম ও হবা প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে এক ধাপ করে এগিয়ে গিয়েছিল। কেন? কারণ তাদের সৃষ্টিকর্তার বিপক্ষে গিয়ে তারা পাপ করেছিল আর “পাপের বেতন মৃত্যু।”—রোমীয় ৬:২৩.

অবশেষে, কয়েক জন ছেলেমেয়ের জন্ম দেওয়ার পর আদম ও হবা মারা গিয়েছিল। এই ছেলেমেয়েরা কি ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে? না, কারণ উত্তরাধিকারসূত্রে তারা তাদের বাবামার কাছ থেকে অসিদ্ধতা পেয়েছিল। বস্তুত, এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে, আদমের সমস্ত বংশধরই উত্তরাধিকারসূত্রে পাপ ও মৃত্যু পেয়েছে। আমরাও তা পেয়েছি। বাইবেল বলে, “এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।”—রোমীয় ৩:২৩; ৫:১২.

আমাদের বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করা

আদম ও হবার বিদ্রোহ মানবজাতির জন্য এমন এক দীর্ঘ এবং অপ্রীতিকর যাত্রার শুরুকে চিহ্নিত করেছিল, যা আমাদের দিনেও চলছে। একজন বাইবেল লেখক এভাবে বলেছিলেন, মানবজাতি “অসারতার বশীকৃত” হয়েছে। (রোমীয় ৮:২০) এটা মানবজাতির সংগ্রামকে কত ভালভাবেই না বর্ণনা করে! কিন্তু, আদমের বংশধরের মধ্যেও তো অনেক বুদ্ধিদীপ্ত বিজ্ঞানী, চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত দক্ষ ব্যক্তি এবং প্রযুক্তিবিদ্যার উদ্ভাবক রয়েছে। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর মানুষের জন্য যে-বিশ্বশান্তি ও কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য স্থির করেছিলেন, তা তাদের মধ্যে কেউ আনতে সক্ষম হয়নি।

আদম ও হবার বিদ্রোহ আমাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের মধ্যে কে অবিচারের যন্ত্রণা, অপরাধের ভয়, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ব্যথা অনুভব করেনি বা প্রিয়জনের মৃত্যুতে শোকে জর্জরিত হয়নি? আমাদের জীবনের যেকোনো নিরুদ্বেগ সময় শীঘ্রই দুঃখজনক ঘটনার দ্বারা ব্যাহত হয় বলে মনে হয়। এমনকি আনন্দময় মুহূর্ত থাকলেও আমাদের অস্তিত্ব ঠিক সেইরকমই যেমনটা প্রাচীন কুলপতি ইয়োব বর্ণনা করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন যে: “মনুষ্য . . . অল্পায়ু ও উদ্বেগে পরিপূর্ণ।”—ইয়োব ১৪:১.

আমরা কোথা থেকে এসেছি আর এখন যে-শোচনীয় পরিস্থিতিতে আমরা রয়েছি তা বিবেচনা করে, ভবিষ্যৎ হতাশাজনক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, বাইবেল আমাদের আশ্বাস দেয় যে, ঈশ্বর অনির্দিষ্ট সময় ধরে এই ধরনের পরিস্থিতি থাকতে দেবেন না। মানুষের জন্য তাঁর আদি উদ্দেশ্য সফল হবেই। (যিশাইয় ৫৫:১০, ১১) কেন আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, এটা শীঘ্রই ঘটবে?

বাইবেল অনুসারে, বর্তমানে আমরা এমন এক বিষম সময়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি, যেটাকে ‘শেষ কাল’ বলা হয়। (২ তীমথিয় ৩:১) এই বাক্যাংশ দ্বারা পৃথিবী গ্রহ এবং এতে বিদ্যমান সকল জীবনের শেষকে বোঝায় না। এর পরিবর্তে, এটা “যুগান্তের” শেষকে অর্থাৎ যে-পরিস্থিতিগুলো আমাদের দুঃখকষ্টের কারণ, সেগুলোর সমাপ্তিকে বোঝায়। (মথি ২৪:৩) বাইবেল বিভিন্ন ঘটনা এবং লোকেদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যেগুলো শেষকালে ব্যাপকভাবে দেখা যাবে। ৮ পৃষ্ঠার বাক্সে এর কয়েকটা লক্ষ করুন আর এরপর “জানালার” বাইরে জগতের দিকে লক্ষ করুন। আমাদের মানচিত্র অর্থাৎ বাইবেল আমাদের বর্তমান অবস্থানকে এই বিধিব্যবস্থার শেষের একেবারে নিকটে বলে চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। কিন্তু, এরপর কি রয়েছে?

সামনেই যে-পথ

আদম ও হবার বিদ্রোহের পর পরই, ঈশ্বর এমন এক রাজ্য স্থাপন করার ব্যবস্থা সম্বন্ধে তাঁর উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন, ‘যাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না।’ (দানিয়েল ২:৪৪) সেই রাজ্য মানবজাতির জন্য অপরিমেয় আশীর্বাদ নিয়ে আসবে, যে-সম্বন্ধে অনেককে প্রার্থনা করতে শেখানো হয়েছে আর তা সাধারণত প্রভুর প্রার্থনা হিসেবে পরিচিত।—মথি ৬:৯, ১০.

ঈশ্বরের রাজ্য হৃদয়ে বিদ্যমান কোনো অস্পষ্ট ধারণা নয়। এটা হল এক প্রকৃত স্বর্গীয় সরকার, যা পৃথিবীর ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করবে। ঈশ্বর এই রাজ্যের মাধ্যমে মানবজাতির জন্য যা সম্পাদন করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন, সেই বিষয়ে একটু বিবেচনা করুন। বাইবেল বলে যে, ঈশ্বর প্রথমে “পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ” করবেন। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮) যারা তাঁর প্রতি বাধ্যতা প্রদর্শন করে তাদের জন্য তিনি কী করবেন? তাঁর লিখিত বাক্য বলে যে, “তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) কোন মানুষের পক্ষেই বা এই বিষয়গুলো সম্পাদন করা সম্ভব হতো? একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের জন্য সেই পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারেন, যা মানবজাতির জন্য তাঁর আদি উদ্দেশ্য ছিল।

ঈশ্বরের রাজ্য যে-আশীর্বাদগুলো নিয়ে আসবে, সেগুলো থেকে আপনি কীভাবে উপকৃত হতে পারেন? যোহন ১৭:৩ পদ বলে: “আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।” যিহোবার সাক্ষিরা সারা পৃথিবীতে এক শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা লোকেদের ঠিক সেই বিষয়ে জানতে বা জ্ঞান নিতে সাহায্য করে থাকে। তারা দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে প্রায় ২৩০টারও বেশি জায়গায় পরিচর্যা করছে এবং তাদের সাহিত্যাদি ৪০০রও বেশি ভাষায় প্রকাশিত হচ্ছে। আপনি যদি আরও কিছু জানতে চান, তা হলে স্থানীয় যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন অথবা ৫ পৃষ্ঠায় দেওয়া উপযুক্ত ঠিকানায় চিঠি লিখুন। (g ১/০৬)

[৬ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“এখন দেখ, তোমাদের কেহ কেহ বলে, অদ্য কিম্বা কল্য আমরা অমুক নগরে যাইব, এবং সেখানে এক বৎসর যাপন করিব, বাণিজ্য করিব ও লাভ করিব। তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার?”—যাকোব ৪:১৩, ১৪

[৬ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

বাইবেল প্রথম নারী-পুরুষের সময় থেকে আমাদের ইতিহাস বর্ণনা করে। তাই, এটি আমাদের বলে যে, আমরা কোথা থেকে এসেছি। এটি এও দেখায় যে, আমরা কোন দিকে এগিয়ে চলেছি। কিন্তু বাইবেল আমাদের যা বলছে, তা বোঝার জন্য আমাদের খুব গভীরভাবে এটি অধ্যয়ন করতে হবে, ঠিক যেভাবে আমরা একটা মানচিত্র পরীক্ষা করব

[৭ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“পাপ” শব্দটি কোনো অন্যায় কাজ অথবা মন্দ বিষয়ের প্রতি প্রবণতা দেখানোর অবস্থাকে নির্দেশ করতে পারে। আমরা পাপপূর্ণ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি, যা আমাদের কাজগুলোকে প্রভাবিত করে। “এমন ধার্ম্মিক লোক পৃথিবীতে নাই, যে সৎকর্ম্ম করে, পাপ করে না।”—উপদেশক ৭:২০

[৮ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

আপনি যদি এমন একটা কাগজ থেকে ফটোকপি করেন যেটাতে একটা গভীর কালো দাগ রয়েছে, তা হলে সবগুলো কপিতেই সেই দাগ দেখা যাবে। আদমের বংশধর—রূপকভাবে বলতে গেলে তার কপি—হিসেবে আমাদের সকলের ওপর পাপের দাগ রয়েছে। এটা সেই একই দাগ যা “প্রথম” আদমের ওপর ছিল

[৮ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

বাইবেল বলে: “মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।” (যিরমিয় ১০:২৩) এটি ব্যাখ্যা করে যে, বিশ্বশান্তি আনার ব্যাপারে মানুষের প্রচেষ্টাগুলো কী কারণে ব্যর্থ হয়েছে। ঈশ্বরের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে “আপন পাদবিক্ষেপ স্থির” করার জন্য মানুষকে সৃষ্টি করা হয়নি

[৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

বাইবেলের গীতরচক ঈশ্বরকে বলেছিলেন: “তোমার বাক্য আমার চরণের প্রদীপ, আমার পথের আলোক।” (গীতসংহিতা ১১৯:১০৫) আমরা যখন বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হই, তখন একটা প্রদীপের মতো বাইবেল আমাদের বিজ্ঞ পদক্ষেপগুলো নিতে সাহায্য করে। ‘আমাদের পথের আলোকের’ মতো এটি আমাদের সামনের পথকে আলোকিত করে, ফলে মানবজাতির জন্য ভবিষ্যতে কী রয়েছে আমরা তা উপলব্ধি করতে পারি

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স]

আশাবাদ বনাম বাস্তবতা

রাষ্ট্রসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বসম্মতভাবে কিছু লক্ষ্য স্থির করেছিল, যেগুলো ২০১৫ সালের মধ্যে পূরণ করা হবে। নীচের বিষয়গুলো এর অন্তর্ভুক্ত:

এক দিনের জীবনযাত্রার ব্যয় এক মার্কিন ডলারেরও কম এবং সেইসঙ্গে ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে এমন লোকেদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা।

সকল শিশুর জন্য স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা।

◼ শিক্ষাব্যবস্থার সকল পর্যায়ে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করা।

◼ পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু মৃত্যুহার দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা।

◼ মায়েদের মৃত্যুহার ৭৫ শতাংশ কমিয়ে আনা।

◼ এইচআইভি/এইডস রোগের বিস্তার রোধ করা আর সেইসঙ্গে অন্যান্য গুরুতর রোগ যেমন ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমিয়ে আনা।

◼ বিশুদ্ধ জল পাচ্ছে না এমন লোকেদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা।

এই লক্ষ্যগুলো কি অর্জন করা যাবে? সারা পৃথিবীর স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটা দল ২০০৪ সালে বিষয়গুলো পুনর্মূল্যায়ন করে এই উপসংহারে এসেছিল যে, আশাবাদকে এই বাস্তবতার সঙ্গে সংগতি রাখতে হবে যে, প্রত্যাশিত অগ্রগতিগুলো আসলেই যা ঘটছে সেগুলোর সঙ্গে মিলছে না। পৃথিবীর অবস্থা ২০০৫ (ইংরেজি) বইয়ের প্রারম্ভিক মন্তব্য বর্ণনা করে: “দরিদ্রতা ক্রমান্বয়ে অনেক এলাকার উন্নয়নকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এইচআইভি/এইডসের মতো রোগগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেগুলো অনেক দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক এক হুমকিস্বরূপ। গত পাঁচ বছরে, প্রায় দুকোটি শিশু প্রতিরোধযোগ্য জলবাহিত রোগগুলোর কারণে মারা গিয়েছে এবং আরও কোটি কোটি লোক রোজকার দুঃখদুর্দশা ও বিশুদ্ধ জল এবং পর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবের কারণে জঘন্য অবস্থা ভোগ করছে।”

[৮, ৯ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

‘শেষ কালের’ কিছু বৈশিষ্ট্য

নজিরবিহীন যুদ্ধবিগ্রহ।—মথি ২৪:৭; প্রকাশিত বাক্য ৬:৪.

দুর্ভিক্ষ।—মথি ২৪:৭; প্রকাশিত বাক্য ৬:৫, ৬, ৮.

মহামারী।—লূক ২১:১১; প্রকাশিত বাক্য ৬:৮.

অধর্মের বৃদ্ধি।—মথি ২৪:১২.

পৃথিবীকে নাশ করা।—প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮.

মহৎ মহৎ ভূমিকম্প।—লূক ২১:১১.

বিষম সময় যা মোকাবিলা করা কঠিন।—২ তীমথিয় ৩:১, NW.

অত্যধিক অর্থপ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:২.

পিতামাতার অবাধ্য।—২ তীমথিয় ৩:২.

স্নেহরহিত।—২ তীমথিয় ৩:৩.

ঈশ্বরপ্রিয় নয় বরং বিলাসপ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:৪.

অজিতেন্দ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:৪.

সদ্‌বিদ্বেষী।—২ তীমথিয় ৩:৪.

আসন্ন বিপদ সম্বন্ধে ভ্রূক্ষেপ করছে না।—মথি ২৪:৩৯.

উপহাসকেরা শেষ কালের প্রমাণ অগ্রাহ্য করে।—২ পিতর ৩:৩, ৪.

পৃথিবীব্যাপী ঈশ্বরের রাজ্যের প্রচার।—মথি ২৪:১৪.

[সৌজন্যে]

© G.M.B. Akash/Panos Pictures

© Paul Lowe/Panos Pictures

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার সাক্ষিরা ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করার জন্য সুপরিচিত