সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা কে?

ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা কে?

ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা কে হবেন, সেই বিষয়ে ঈশ্বর বাইবেলের আলাদা আলাদা লেখককে তাঁর সম্বন্ধে বিস্তারিত নথি লিপিবদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। যেমন:

  • সেই শাসককে ঈশ্বর নিজেই বাছাই করেছেন। “আমিই আমার রাজাকে স্থাপন করিয়াছি . . . আমি জাতিগণকে তোমার দায়াংশ করিব, পৃথিবীর প্রান্ত সকল তোমার অধিকারে আনিয়া দিব।”—গীতসংহিতা ২:৬, ৮.

  • সেই শাসক রাজা দায়ূদের একজন উত্তরাধিকারী হবেন। “একটী বালক আমাদের জন্য জন্মিয়াছেন, একটী পুত্ত্র আমাদিগকে দত্ত হইয়াছে . . . দায়ূদের সিংহাসন ও তাঁহার রাজ্যের উপরে কর্ত্তৃত্ববৃদ্ধির ও শান্তির সীমা থাকিবে না, যেন তাহা সুস্থির ও সুদৃঢ় করা হয়।”—যিশাইয় ৯:৬, ৭.

  • সেই শাসক বৈৎলেহমে জন্মগ্রহণ করবেন। “হে বৈৎলেহম . . . তোমা হইতে ইস্রায়েলের মধ্যে কর্ত্তা হইবার জন্য আমার উদ্দেশে এক ব্যক্তি উৎপন্ন হইবেন; . . . তিনি পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত মহান্‌ হইবেন।”—মীখা ৫:২, ৪.

  • সেই শাসককে লোকেরা তিরস্কার ও হত্যা করবে। “তাহার ন্যায় তিনি অবজ্ঞাত হইলেন, আর আমরা তাঁহাকে মান্য করি নাই। . . . তিনি আমাদের অধর্ম্মের নিমিত্ত বিদ্ধ, আমাদের অপরাধের নিমিত্ত চূর্ণ হইলেন।”—যিশাইয় ৫৩:৩, ৫.

  • সেই শাসককে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত ও গৌরবান্বিত করা হবে। “তুমি আমার প্রাণ পাতালে পরিত্যাগ করিবে না, তুমি নিজ সাধুকে ক্ষয় দেখিতে দিবে না। . . . তোমার দক্ষিণ হস্তে নিত্য সুখভোগ।”—গীতসংহিতা ১৬:১০, ১১.

যিশু খ্রিস্টই হলেন আদর্শ শাসক

পুরো মানবইতিহাসে আদর্শ শাসক হওয়ার জন্য একমাত্র একজন ব্যক্তির প্রতি এই সমস্ত বর্ণনা প্রযোজ্য। আর তিনি হলেন যিশু খ্রিস্ট। আসলে, একজন স্বর্গদূত যিশুর বিষয়ে তাঁর মা মরিয়মকে বলেছিলেন: “ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ূদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; . . . ও তাঁহার রাজ্যের শেষ হইবে না।”—লূক ১:৩১-৩৩.

পৃথিবীতে থাকাকালীন যিশু কখনো শাসন করেননি। এর কারণ হল, তাঁকে স্বর্গের শাসক হিসেবে বাছাই করা হয়েছিল আর তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হিসেবে স্বর্গ থেকেই মানবজাতির উপর শাসন করবেন। কেন বলা যেতে পারে যে, তিনিই একজন আদর্শ শাসক? পৃথিবীতে থাকাকালীন তিনি যেভাবে জীবনযাপন করেছিলেন, তা বিবেচনা করুন।

  • যিশু লোকেদের জন্য চিন্তা করতেন: যিশু পুরুষ ও মহিলা, যুবক ও বৃদ্ধ সবাইকে সাহায্য করতেন, তা তাদের পটভূমি ও পদমর্যাদা যা-ই হোক না কেন। (মথি ৯:৩৬; মার্ক ১০:১৬) একজন কুষ্ঠরোগী যখন যিশুকে অনুরোধ করেছিলেন: “যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আমাকে শুচি করিতে পারেন,” তখন যিশু তার প্রতি করুণাবিষ্ট হন এবং তাকে সুস্থ করেন।—মার্ক ১:৪০-৪২.

  • যিশু আমাদের শিখিয়েছিলেন, কীভাবে ঈশ্বরকে খুশি করতে হয়। তিনি বলেছিলেন: “তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।” তিনি এও বলেছিলেন, আমরা যেন অন্যদের সঙ্গে ঠিক তেমনই আচরণ করি, যেমনটা আমাদের প্রতি অন্যেরা করুক বলে আমরা চাই। আর এই নীতিকে সুবর্ণ নিয়ম বলা হয়। এ ছাড়া, তিনি দেখিয়েছিলেন যে, ঈশ্বর শুধুমাত্র আমাদের কাজ নয় বরং আমরা কীভাবে চিন্তা করি এবং আমাদের অনুভূতি কেমন, সেটাও লক্ষ করেন। তাই, ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য আমাদের অবশ্যই আমাদের গভীর অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। (মথি ৫:২৮; ৬:২৪; ৭:১২) যিশু জোর দিয়েছিলেন, আমরা যদি প্রকৃতই সুখী হতে চাই, তা হলে আমাদের অবশ্যই ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান, তা জানতে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।—লূক ১১:২৮.

  • যিশু অন্যদের প্রেম করতে শিখিয়েছিলেন। যিশুর কথা ও কাজ এতটাই জোরালো ছিল যে, সেগুলো তাঁর শ্রোতাদের হৃদয় স্পর্শ করত। “লোকসমূহ তাঁহার উপদেশে চমৎকার জ্ঞান করিল; কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির ন্যায় তাহাদিগকে উপদেশ দিতেন।” (মথি ৭:২৮, ২৯) তিনি তাদের শিখিয়েছিলেন: “আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও।” এমনকী যাদের কারণে তাঁকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল, তিনি তাদের জন্যও প্রার্থনা করেছিলেন: “পিতঃ, ইহাদিগকে ক্ষমা কর, কেননা ইহারা কি করিতেছে, তাহা জানে না।”—মথি ৫:৪৪; লূক ২৩:৩৪.

পুরো পৃথিবীর শাসক হওয়ার জন্য যিশুই হলেন একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি। তিনি খুবই দয়ালু এবং লোকেদের সাহায্য করতে চান। কিন্তু, কখন তিনি শাসন করতে শুরু করবেন?